খাস কলকাতায় সিটি স্ক্যান করতে এসে মৃত্যু মহিলার, তদন্ত শুরু করল পুলিশ

বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টার শারীরিক পরীক্ষা করতে যান এক মহিলা। সেখানে তিনি সিটি স্ক্যান করাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এই পরীক্ষা করার সময় হঠাৎ মৃত্যু হল ওই মহিলার। খাস কলকাতায় এমন ঘটনা ঘটায় আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার দুপুরে হাজরার একটি বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বালিগঞ্জ থানার পুলিশ। এই ঘটনার পর অনেকেই সেখানে আতঙ্কিত বলে খবর। কিন্তু কেন এমন ঘটল?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দক্ষিণ কলকাতায় এমন ঘটনা শুনে অনেকে চমকে উঠছেন।

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত মহিলার নাম সালেমা বিবি (৪৭)। তিনি সরশুনার বাসুদেবপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি হাজরার বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে পেটের সিটি স্ক্যান করতে এসেছিলেন। প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সালেমাকে সিটি স্ক্যানের আগে ‘নন–আয়নিক কনট্রাস্ট’ দেওয়া হয়েছিল। এটা পুলিশকে জানান ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ। তবে ওই ওষুধ প্রয়োগ করতেই কিছুক্ষণ পর মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। রক্তচাপ তাঁর দ্রুত নামতে শুরু করে। আর তার পরই পরীক্ষাকেন্দ্রেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এই ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। যদিও পরে মৃতদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ফিরে যান।

কেন এমন ঘটনা ঘটল?‌ এই বিষয়ে চিকিৎসকরা নানা অনুমান করলেও এখনও কোনও স্পষ্ট বার্তা দিতে পারেননি। এখানে চিকিৎসকরা মনে করছেন, ‘অ্যানাফিল্যাক্টিক শক’ পেয়েই ওই মহিলার মৃত্যু ঘটেছে। তবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষের কথায়, ‘নন আয়নিক কনট্রাস্ট দেওয়ার জেরে ওই মহিলার শরীরে মারাত্মক অ্যালার্জি হয়েছিল। আর তা থেকেই বাকি ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। ওই অ্যালার্জির জেরে মহিলার শিরায় বাহিত রক্ত, প্লাজমা সব বাইরে চলে এসেছিল। শিরা রক্তশূন্য হওয়ায় শরীরের রক্তচাপও নেমে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’‌

আরও পড়ুন:‌ এবার নির্দলের পোস্টারে শুভেন্দুর ছবি ফুটে উঠল, কোলাঘাটে ঘটে গেল চমকের ঘটনা

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ আবার অনেক চিকিৎসকের মতে, অ্যানাফিল্যাক্টিক শকের অভিঘাত তখনই হয়, যখন শরীরের অধিকাংশ রক্তবাহী নালি ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরেই শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই নীচে নেমে যায়। তার ফলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। আর বিকল হতে থাকে। চিকিৎসক সৌমিত্রের ধারণা, ‘এটা অত্যন্ত বিরল ঘটনা। তবে এটা এমনভাবে হয় যে চিকিৎসকরা কিছু করার সুযোগ পান না। ফলে রোগী মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েন।’‌