‘নিয়মকে বুড়ো আঙুল’, RBU-তে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষামহলের বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, ইউজিসি নিয়ম অনুযায়ী কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা যায় না। এই নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)। উল্লেখ্য, আজ শুক্রবার থেকে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন শুভ্রকমলবাবু।

আরও পড়ুন: ‘সেরা পড়ুয়াকে উপাচার্য করা হবে’‌, রাজ্যপালের মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে

সম্প্রতি উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত তৈরি হয়েছে। শিক্ষা দফতরকে না জানিয়েই রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট একটি জনস্বার্থ মামলাও হয়। ওয়েবকুটার অভিযোগ, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির নিয়ম লঙ্ঘন করে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে প্রাক্তন বিচারপতিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হল? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওয়েবকুটা। 

তাদের বক্তব্য, রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ ইউজিসির নিয়মের পরিপন্থী এবং অনৈতিক পদক্ষেপ। ওয়েবকুটার বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে নাগরিকদের প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত। এছাড়াও, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমিতিও এর সমালোচনা করেছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি কুটার সদস্যের বক্তব্য, ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে গেলে কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরের বাইরে কোনও ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। তাঁরা এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।

অন্যদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিও একই দাবি করেছে। তাদের বক্তব্য, অস্থায়ী উপচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মান ভিন্ন হতে পারে। তবে ১৯৮১ সালে রাজ্যে আইন আসার পর কোনও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা জগতের বাইরে থেকে কাউকে উপাচার্য নিয়োগ নজিরবিহীন। 

তাদের মতে, এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের অবনতি হবে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির দাবি, ইউজিসির নিয়ম মেনে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হোক। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক হয়েছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার টুইটারে লিখেছেন, ‘বিশ্বভারতীর নতুন উপাচার্য কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন। তিনি এতটাই বিতর্কিত ছিলেন যে ফেয়ারওয়েল ছাড়াই তাঁকে বিদায় দেওয়া হয়েছিল।’ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ঘোষ বলেন, ‘এটা রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত।’