US Ambassador on Manipur: ‘বললেই মণিপুরে সাহায্য করবে আমেরিকা’, কলকাতায় এসে ‘বিতর্কিত মন্তব্য’ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের

বিগত মে মাস থেকেই ধারাবাহিক হিংসার সাক্ষী থেকেছে উত্তরপূর্বের মণিপুর। সেই রাজ্যে শান্তি ফেরার কোনও ইঙ্গিত মিলছে না। এরই মাঝে কলকাতায় সফরে আসা মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেট্টিকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল মণিপুরের পরস্থিতি নিয়ে। সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়েই বিতর্ক তৈরি করলেন গারসেট্টি। তিনি বলেন, ‘কেউ চাইলে আমেরিকা মণিপুরে সাহায্য করতে প্রস্তুত।’ ‘ভালো মনে’ সাহায্য করার কথা বললেও তা আখেড়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নাক গলানোর’ সামিল।

বৃহস্পতিবার কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে গারসেট্টি বলেন, ‘আমেরিকার কাছে মণিপুরের পরিস্থিতি কৌশলগত উদ্বেগের বিষয় নয় বলেই মনে করি আমি। তবে এটা মানুষের বিষয়। এই ধরনের হিংসায় শিশু বা নিরস্ত্র মানুষদের মৃত্যু হলে আপনি তা নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য হবেন। তার জন্য আপনাকে ভারতীয় হতে হবে না। যদি বলা হয়, তবে আমরা যে কোনও উপায়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত। আমরা জানি এটি একটি ভারতীয় বিষয়। আমরা শান্তির জন্য প্রার্থনা করি এবং আশা করি যে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরই মধ্যে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।

প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও।