নির্যাতিতাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা যাবে না: এলাহাবাদ হাইকোর্ট

ধর্ষণের শিকার নির্যাতিতার সন্তানের জন্ম দেওয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, ধর্ষণের শিকার নির্যাতিতাকে সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা যাবে না। উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর জেলায় ধর্ষণের শিকার এক প্রতিবন্ধী নাবালিকার গর্ভপাতের মামলায় এমনই মন্তব্য করেছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, ‘নির্যাতিতাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা যাবে না।’

আরও পড়ুন: নাবালিকার পোশাক খুলে তার উপর শোওয়া ও পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করতে বললেই ‘ধর্ষণ’ নয়: HC

মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি প্রশান্ত কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলার বয়ান অনুযায়ী, ১২ বছর বয়সি এক নাবালিকাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছিল  তার এক প্রতিবেশী যুবক। কিন্তু, সে মূক ও বধির হওয়ার কারণে ধর্ষণের কথা বলতে পারেনি পরিবারের কাউকে। পরে সে তার মাকে সাংকেতিক ভাষায় পুরো বিষয়টি প্রকাশ করে। তারপরে তার মা ২০২৩ সালের ১৫ জুন বুলন্দশহরের খুর্জা নগর থানায় অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। 

পরের দিন ১৬ জুন নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষার সময় দেখা যায় যে নাবালিকা ২৩ সপ্তাহের গর্ভবতী। ২৭ জুন যখন বিষয়টি মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে রাখা হয়েছিল তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে যেহেতু গর্ভাবস্থা ২৪ সপ্তাহ অতিক্রম করেছে তাই গর্ভপাত করার আগে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। এরপর নির্যাতিতার মা হাইকোর্টে যান। আদালত জানায়, ‘প্রত্যাখ্যান করার অধিকারকে অস্বীকার করা এবং তাকে মাতৃত্বের দায়িত্বে আবদ্ধ করা তার মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার মানবিক অধিকারকে অস্বীকার করা হবে। তার শরীর সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। তিনি মা হওয়ার জন্য হ্যাঁ বা না বলতে পারেন।’

বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য,  আলিগড়ের জওহর লাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে প্রসূতি ও গাইনোকোলজি বিভাগের সভাপতিত্বে পাঁচজন ডাক্তারের একটি দল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। ১২ জুলাই মেডিক্যাল রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়াও, ডাক্তারদের ওই দলে অ্যানেস্থেটিস্ট, রেডিও ডায়াগনসিস বিভাগের একজন করে সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, একজন মহিলার গর্ভধারণ বন্ধ করার সময় মাত্র ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত। তার বেশি সময় পেরিয়ে গেলে সেক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।