বাংলার ‘‌মোস্ট ওয়ান্টেড’‌ মাওবাদী নিকেশ সিআরপিএফের হাতে, জোরদার গুলির লড়াই

মাওবাদী–সেনাবাহিনীর তুমুল গুলির লড়াইয়ের পর এল সাফল্য। আর তার জেরে দুই মাওবাদী নেতা নিহত হল। তার মধ্যে বড় বিষয় হল, এই দু’‌জনের মধ্যে একজন বাংলার মাওবাদী নেতা। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় ছিল। বহুদিন ধরে এই মাওবাদী নেতার খোঁজ করা হচ্ছিল। কিন্তু অত্যন্ত সুকৌশলে বারবার স্থান বদল করার জেরে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের পশ্চিম সিংভূমে নিহত হয়েছে দুই মাওবাদী নেতা। সেখানে গোয়েলকেরা থানা এলাকায় রাতভর গুলির লড়াই চলে বলে খবর। সিআরপিএফের কোবরা বাহিনী এবং মাওবাদীদের মধ্যে তুমুল গুলির লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয় ওই দু’জনের। মৃতদের মধ্যে একজন বাঁকুড়ার বারিকুলের বাসিন্দা।

কে সেই বাংলার মাওবাদী নেতা?‌ সিআরপিএফ সূত্রে খবর, নিহত ওই মাওবাদী নেতার নাম সমীর ওরফে সুরেন্দ্রনাথ সোরেন। বড় নাশকতা করার জন্য ঝাড়খণ্ড এসেছিল তারা। তারপর বাংলায় ফিরে যাওয়ার ছক কষেছিল। কিন্তু গোটা পরিকল্পনা আগে থেকে হাতে চলে আসায় ঘিরে ফেলা হয় তাদের। তখনই হয় তুমুল গুলির লড়াই। এই লড়াইতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কোবরার ডেপুটি কমান্ড্যান্ট দীপককুমার তিওয়ারি। তাঁর বাঁ–হাতের কনুইতে গুলি লেগেছে। চিকিৎসার জন্য তাঁকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় রাঁচির একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল?‌ এই মাওবাদী নাশকতার কথা সুস্পষ্ট করে গোয়েন্দা ইনপুটের মাধ্যমে জানানো হয়। তার ভিত্তিতে কোবরা বাহিনী ঝাড়খণ্ডের ওই জেলায় মাওবাদী দমন অভিযানে নামে। কোবরার কাছে খবর আসে, সেখানে ঝাড়খণ্ডের শীর্ষ মাওবাদী কয়েকজন নেতা দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তখনই অভিযানে নেমে পড়া হয়। কিন্তু পথেই শুরু হয়ে যায় লড়াই। কোবরা বাহিনীর ২০৯ নম্বর ব্যাটালিয়নের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড পুলিশের যৌথ অভিযান চলতেই চলে গুলি, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মাওবাদীরা বাহিনীকে লক্ষ্য করেই গুলি চালাতে থাকে। তখনই পাল্টা গুলি চালায় কোবরা বাহিনী। আর দুই মাওবাদী স্কোয়াড সদস্যের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন:‌ নিহত ১৯ জনের পরিবারকে হোমগার্ডের চাকরি ও আর্থিক সাহায্য, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ দু’‌জনের দেহ পড়ে যেতেই অন্যরা গা–ঢাকা দেয়। মৃতদের মধ্যে একজন বাংলার সমীর ওরফে সুরেন্দ্রনাথ সোরেন হিসেবে শনাক্ত করতে পেরেছে সিআরপিএফ। সমীর মাওবাদীদের ঝাড়খণ্ড স্কোয়াডে সক্রিয় সদস্য ছিল বলেই দাবি সিআরপিএফের। এই অভিযান শেষ করার পর ওই এলাকায় জোরদার তল্লাশি শুরু হয়। তখন কাউকে পাওয়া না গেলেও ২০ কেজির মতো আইডি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান ভেস্তে দিতেই এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক দিয়ে ফাঁদ পেতেছিল মাওবাদীরা বলে সূত্রের খবর।