‘হাইরিস্ক প্রসূতিদের’ হাসপাতালে নিয়ে যাবেন আশাকর্মীরা, নয়া উদ্যোগ রাজ্যের

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা বলছে, সন্তান প্রসবের ৪২ দিনের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ মায়ের মৃত্যু হয়। এমন ছবি দেখা গিয়েছে ভারতে। তাই মা এবং শিশুর মৃত্যু কমাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে সমস্ত প্রসূতি হাইরিস্ক হিসেবে চিহ্নিত থাকবেন আশা কর্মীরাই তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। শুধু তাই নয় এর জন্য আশা কর্মীদের ভাতাও দেবে স্বাস্থ্য দফতর। সেক্ষেত্রে দেড় মাসের পর যদি প্রসূতি ও সন্তান সুস্থ থাকে তাহলে আশা কর্মীদের আড়াইশো টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে প্রত্যেক মা পিছু।

আরও পড়ুন: অনন্য নজির গড়লেন ভারতের আশাকর্মীরা! ১০ লাখ মহিলাকে সম্মান জানাল ‘হু’ 

ইতিমধ্যেই এনিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সমস্ত জেলার স্বাস্থ্য দফতরে সেই বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার চাইছে প্রসবের পর মা এবং সন্তানের মৃত্যুর হার কমাতে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে একাধিক পদক্ষেপ করেছে সরকার। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। মূলত জাতীয় স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে হাইরিস্ক প্রসূতি কারা তা নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে বিষয়টিও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হাইরিস্ক প্রসূতিদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট আশা কর্মীরা তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাবেন।

সাধারণত, শিশুর জন্মের পর মায়ের শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। তাঁদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। যার মধ্যে রয়েছে জরায়ু ফুলে যাওয়া, অত্যাধিক রক্তস্রাব, সেপসিস, পেটের বাঁ দিক ফুলে যাওয়া, অসহ্য যন্ত্রণা সহ বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ মায়েদের শরীরে লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়া শিশুদেরও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের সমস্যা ৪২ দিন ধরে চলতে পারে। তাই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এই সময়ের মধ্যে মা ও সন্তানের কোনও শারীরিক সমস্যা হলে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাবেন আশাকর্মীরা। পাশাপাশি মা এবং তাঁর পরিবারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে, প্রয়োজনে প্রসূতিরা কী ধরনের খাবার খাবেন আশা কর্মীদেরই তা বলে দিতে হবে। এর ফলে আশা কর্মীরা যেমন কাজে উৎসাহ পাবেন তেমনি শিশু মৃত্যু কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর।

প্রসঙ্গত, হাই রিস্ক প্রসূতি মা এবং নবজাতকদের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ‘মাতৃমা’ পোর্টাল করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এর মাধ্যমে শিশু এবং মায়ের যাবতীয় চিকিৎসার নজরদারি চলবে। ইউনিসেফ ও নারী ও শিশুকল্যাণ দফতর রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের সহায়তায় জেলায় জেলায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বিশেষ সেল গড়া হয়েছে। এই পোর্টালের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে নবজাতকের শারীরিক অবস্থাও৷