ভিড় বাড়ছে কলকাতায়, একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিতে জায়গা দখল চলছে

রাত পোহালেই একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ। তৃণমূল কংগ্রেস পালন করবে শহিদ দিবস। ধর্মতলা চত্ত্বর মানুষের কালো মাথায় ছেয়ে যাবে। গোটা কলকাতা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে কলকাতায় আসতে শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী–সমর্থকরা। তাঁদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই ব্যবস্থা ঘুরে দেখলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী যে মঞ্চ থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখবেন সেটি ঘুরে দেখেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। এই আবহে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রের নীল কার্পেটে মোড়া মেঝে দখল হয়ে গেল। না হলে আর শহরে জায়গা পাওয়া যাবে না।

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী–সমর্থকরা তো তাও নানা জায়গায় ঠাঁই পাচ্ছেন। কিন্তু অনেক সাধারণ মানুষ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে কলকাতার ফুটপাত দখল করতে শুরু করেছেন বলে অভিযোগ। একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে নেত্রীর বক্তব্য শুনে সেই জায়গা ছেড়ে দেবেন। ফিরবেন আবার বাড়িতে। প্রত্যেক বছর একুশে জুলাইয়ের দিনে শহিদ দিবস উদযাপিত হলেও এবার তা বাড়তি মাত্রা পেতে চলেছে। কারণ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল সাফল্যের জন্য। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল। এই আবহে একুশে জুলাই দিনটিকে শ্রদ্ধা দিবস হিসাবে পালন করার ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দূরের জেলাগুলি থেকে কলকাতায় আসতে শুরু করেছেন তৃণমূলের কর্মী–সমর্থকরা। আর ভিড় বাড়ছে কলকাতা শহরে।

অন্যদিকে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিধাননগরের বইমেলা প্রাঙ্গণ, কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, আলিপুর উত্তীর্ণ অডিটোরিয়াম, শিয়ালদার বহু লজ এবং ধর্মশালায় ভিড় করতে শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী–সমর্থকরা। পুরুলিয়া, বীরভূম থেকে শুরু করে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি থেকে বিপুল কর্মী, সমর্থক কলকাতায় এসেছেন। এছাড়া বিপুল পরিমাণ সাধারণ মানুষ এসে হাজির হয়েছেন। ফলে বুধবার রাত থেকেই কলকাতা শহরে ব্যাপক ভিড় বাড়তে শুরু করেছে বলে খবর। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সব বন্দোবস্ত খতিয়ে দেখেন এবং কর্মীদের নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন:‌ অটিস্টিক শিশুকে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়, অভিযুক্ত স্পিচ থেরাপিস্ট

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ কলকাতা পুলিশ ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করছেন। সেটি খতিয়ে দেখেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ফোর্স মোতায়েন, সিসি ক্যামেরা ইনস্টল থেকে ট্রাফিক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন তিনি। কলকাতা পুলিশ ট্রাফিক অ্যাডভাইসারি জারি করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আবার এমন এক আবহে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাই চিন্তা বেড়েছে তৃণমূল নেতাদের। শুক্রবার রাজ্য–রাজনীতির যাবতীয় ‘ফোকাস পয়েন্ট’ কেন্দ্রীভূত হবে ধর্মতলায়। সেখানে জননেত্রী কোন বার্তা দেন তা শুনতেই জেলা থেকে কলকাতায় এসেছেন মানুষজন। ইট পেতে রেখেছেন জায়গা। যাতে ঘুম থেকে উঠেই সেখানে বসে যেতে পারেন। দেশের বিরোধীদের তৈরি ‘ইন্ডিয়া’র পথচলার দিকনির্দেশ মিলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তাপস রায় বলেন, ‘‌একুশের মঞ্চ থেকে আগাম রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা হবে। আট মাস পরে লোকসভা নির্বাচন। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য শুনতে মানুষ ভিড় করছেন’‌।