জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: টেস্ট দলে সুযোগ পেয়ে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি। তবে সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পূরণ করে এবার ব্রায়ান লারা (Brian Lara)-ভিভ রিচার্ডসের (Sir Vivian Ricards) দেশে টেস্ট অভিষেক ঘটালেন মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar)। গ্রোইন ইনজুরির জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের (West Indies) বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারছেন না শার্দূল ঠাকুর (Shardul Thakur)। তাঁর বদলি হিসেবে প্রথম একাদশে বঙ্গ পেসারকে সুযোগ দিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। বিসিসিআই-এর (BCCI) তরফ থেকে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) টেস্ট ক্যাপ পরে মুকেশের ছবি পোস্ট করা হয়েছে।
টসের সময় রোহিত বলেন, “আমাদের দলে একটাই বদল হয়েছে। শার্দূলের হালকা চোট লেগেছে। তাই ও খেলছে না। ওর বদলে মুকেশের অভিষেক হচ্ছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে মুকেশ খুব ভালো বোলিং করেছে। ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করার জন্য মুকেশকে সুযোগ দেওয়া হল।”
ছেলে বড় ক্রিকেটার হতে পারে, ভারতীয় দলে সুযোগ পেতে পারে, কখনও এমনটা মনে করতেন না মুকেশের প্রয়াত বাবা কাশীনাথ সিং। গতবছর ব্রেন স্ট্রোকে মারা যান মুকেশের বাবা কাশীনাথ। নিজে ট্যাক্সি চালালেও, ছেলেকে সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনা করার কথা বলতেন। সেই ছেলেই এবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই টেস্ট অভিষেক ঘটালেন।
— BCCI (@BCCI) July 20, 2023
আরও পড়ুন: EXCLUSIVE, Mukesh Kumar: অভাবের গলি থেকে টিম ইন্ডিয়ার ড্রেসিংরুম, সাফল্যের সিঁড়িতে পা রেখে বাবাকে স্মরণ মুকেশের
আরও পড়ুন: IND vs PAK, Asia Cup 2023: তিনবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই! উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছেন ‘দ্য ওয়াল’
বিহারের গোপালগঞ্জের কাকরকুণ্ডে জন্ম মুকেশের। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে বিহারের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছেন। ছোট বেলায় স্বপ্ন দেখতেন আর্মিতে যোগ দেওয়ার। চেষ্টাও করেছিলেন। শারীরিক পরীক্ষায় তিন–তিনবার ব্যর্থ হন। ২০১২ সালে এক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মুকেশ। এরপর বাবা তাঁকে কলকাতায় এসে কাজ করার কথা বলেন। কলকাতায় এসে কাজ করার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলাও চালিয়ে যান মুকেশ। সেখান থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন। সেই স্বপ্ন এবার পূরণ হল।
এহেন মুকেশ কয়েক সপ্তাহ আগে বিশ্ব টেস্ট ফাইনালের দলে স্ট্যান্ডবাই বোলার হিসেবে ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফাইনালে নামার আগে বিরাট কোহলি (Virat Kohli)-অজিঙ্কা রাহানেদের (Ajinkya Rahane) লাগাতার নেটে বোলিং করেছেন বঙ্গ পেসার। বেশ কিছু আলাদা পরামর্শ পেয়েছিলেন।
২০১৪ সালে বাংলার ‘ভিশন ২০২০’ প্রোজেক্টের জন্য ট্রায়ালে ডাক পান মুকেশ। বোলিংয়ের জন্য তাঁকে যখন ডাকা হয়েছিল, তিনি বাথরুমে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত পরে মুকেশকে বোলিং করার সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁর বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়ে ‘ভিশন ২০২০’ শিবিরে মুকেশকে সুযোগ দেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ওয়াকার ইউনিস। ক্লাব ক্রিকেটে দুরন্ত বোলিং করে ২০১৫ সালে বাংলার সিনিয়র দলে সুযোগ পান মুকেশ। আর তাই মুকেশের কাছে ‘গড ফাদার’ হলেন মহারাজ। সেই শুরু। এরপর মুকেশকে ফিরে তাকাতে হয়নি।
একটা সময় পুষ্টির অভাবে ‘বোন এডিমা’ হয়ে যায়। ক্রিকেট খেলা তো দূর, ঠিক ভাবে হাঁটতেও পারতেন না। ক্রিকেট কিট ছিল না। সেটা মনোজ তিওয়ারি দিয়েছিলেন। ক্রিকেট কেরিয়ার জুড়ে ঝড়-ঝঞ্ঝা এসেছে, কিন্তু কোনও কিছুই মুকেশকে দমাতে পারেনি। ছোট থেকেই মুকেশ একটা স্বপ্ন দেখতেন। ভারতীয় দলের জার্সিতে তিনি খেলবেন। অবশেষে বঙ্গ পেসারের স্বপ্নপূরণ হল। দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে লাল বল হাতে রানআপ নেবেন মুকেশ।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)