আমরা কোথায় যাব? রাজ্যের নারী নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ভাসালেন লকেট

মণিপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে দেশজোড়া প্রতিবাদের মধ্যেই বাংলায় নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার দিল্লিতে দলের সদর দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় রাজ্যে নারী নির্যাতনের ছবি তুলে ধরেন তিনি। তখনই অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেন ছোট ঘটনা, পুলিশ আমাদের অভিযোগ নেয় না। মা – বোনেদের বাঁচাতে আমরা কোথায় যাব?

এদিন লকেট বলেন, ‘ভিডিয়ো ভাইরাল হলে তবেই কি আমরা এই ধরণের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলব? কংগ্রেসও মমতার অপরাধে সামিল। সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী চুপ কেন? বাকি রাজ্যে গিয়ে এরা কান্নাকাটি করে। কিন্তু বাংলা নিয়ে এরা মুখ খোলে না। অধীর চৌধুরীকে জিজ্ঞাসা করুন, ওর এলাকায় তৃণমূল কেমন অত্যাচার করছে।

একের পর এক ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হয়েও চুপ। আপনারা বলুন, আমরা কোথায় যাব? আমরাও মহিলা। আমরা চাই আমাদের মেয়েদের কোনও ভাবে বাঁচাতে। আমরাও এই দেশেরই মেয়ে। পশ্চিমবঙ্গ দেশের বাইরে নয়। আমাদের FIR নেয় না পুলিশ। অনেক কষ্টে পাঁচলা ও ডোমজুড়ের ঘটনায় অনলাইনে আজ FIR দায়ের করা গিয়েছে’।

রাজ্যে নারী নির্যাতনের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনায় আমাদের মহিলা কর্মীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে গণনাকেন্দ্রের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল তৃণমূলের গুন্ডারা। আমরা কিচ্ছু করতে পারিনি। শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। পুলিশকে বললাম। পুলিশ বলল, আপনি এখান থেকে চলে যান’।

একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকেও কাঠগড়ায় তোলেন লকেট। বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে জানালে উনি বলেন, এগুলো ছোট ঘটনা। পঞ্চায়েত ভোটে ৫৭ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তার পর মুখ্যমন্ত্রী বয়ান দিলেন, পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। ছোটখাটো কয়েকটা ঘটনা ঘটেছে। পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণের সময় বলেছিলেন ‘ছোট ঘটনা’, ‘প্রণয় ঘটিত সম্পর্ক ছিল’। প্রণয় ঘটিত সম্পর্ক থাকলে কাউকে অত্যাচার করে মেরে ফেলা যায় না কি?’

লকেটের প্রশ্ন, ‘আমরা কোথায় যাব? আমরা কেন্দ্রকে বলি। কেন্দ্র তদন্ত করে, রাজ্যের তরফে কোনও সহযোগিতা করা হয় না। পাঁচলায় আমাদের মহিলা কর্মীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। গোটা রাজ্য মহিলাদের ওপর নির্যাতন চলছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নামে লুঠ হয়েছে’।