Gyanvapi Survey Case in Supreme Court: জ্ঞানবাপী মসজিদে ASI সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, মাঝপথে থামল মাপজোক

বারাণসী আদালতের নির্দেশে আজ শুরু হয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘বৈজ্ঞানিক সমীকক্ষা’। এই সমীক্ষার বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা। আর সেই প্রেক্ষিতে সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয় এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি। তার আগে আর্কেওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে কোনও খনন কাজ করতে বারণ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই নিয়ে বলেছেন, ‘আপাতত সেখানে স্থিতাবস্থা থাকুক। কোন খনন যেন না করা হয় ততক্ষণ। এমন কোনও পদ্ধতিতেও যাতে সমীক্ষা না চালানো হয় যাতে সেই কাঠামোর ক্ষতি হয়।’ পরে শুনানি চলাকালীন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শীর্ষ আদালতকে বলেন, ‘একটা ইটও তার জায়গায় থেকে সরানো হয়নি। এখন শুধু ছবি তুলে এবং মাপজোক করে সমীক্ষা চলবে।’ এদিকে মুসলিম পক্ষকে এলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। এদিকে আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে বারাণসী আদালতের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে গত শুক্রবার বারাণসী জেলা আদালত জানায়, ঘিরে রাখা জায়গা ছাড়া জ্ঞানবাপী মসজিদে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’ চালাতে পারবে আর্কেওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া।

জ্ঞানবাপীর অজুখানায় এক পাথরকে ‘শিবলিঙ্গ’ বলে দাবি করে মামলা হয়েছিল আদালতে। সেই সংক্রান্ত মামলার একাধিক আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্ট, বারাণসী আদালতে। এরই মাঝে বারাণসী আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, মসজিদে সমীক্ষা চালাতে পারবে আর্কেওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। সমীক্ষার বিরুদ্ধে মুসলিম পক্ষ শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয় মসজিদের আশেপাশে। এদিকে এএসআই-এর দল গতকালই বারাণসীতে পৌঁছে গিয়েছিল প্রয়োজনী যন্ত্রপাতি সঙ্গে নিয়ে। এরপর আজ সকালে মোট ২৪ জনের একটি দল মসজিদে প্রবেশ করে। এদিকে সমীক্ষকদের সঙ্গে মসজিদে প্রবেশ করেছেন চারজন মহিলা আবেদনকারী এবং তাঁদের আইনজীবীরাও। এদিকে এই সমীক্ষার সময় মুসলিম পক্ষেরও থাকার কথা ছিল। তবে তারা এই সমীক্ষা বয়কট করে।

প্রসঙ্গত, জ্ঞানবাপী মসজিদে শিবলিঙ্গ থাকার দাবি করে সেখানে পুজো করার আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল বারাণসী আদালতে। হিন্দু পক্ষের সেই দাবি খারিজ করে পালটা মামলার আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। পরে সুপ্রিম নির্দেশে সেই মামলা ফিরে আসে বারাণসী আদালতে। বারাণসী দায়রা আদালতে বিচারক একে বিশ্বেসের একক বেঞ্চ জানিয়ে দেয় যে হিন্দু পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলা এগোবে। মুসলিম পক্ষ অঞ্জুমানে ইন্তেজামিয়া কমিটির আবেদন খারিজ করেন বিচারক। জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলায় বারাণসী জেলা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যায় আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি। এভাবেই এই মামলা এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ঘুরে বেরাচ্ছে।

উল্লেখ্য, পাঁচজন মহিলা জ্ঞানবাপী মসজিদকে হিন্দু মন্দির দাবি করে পুজো করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন বারাণসীর আদালতে। এরপর সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত একটি সমীক্ষার নির্দেশ দেয়। বিতর্ক সত্ত্বেও সেই সমীক্ষা সম্পন্ন হয়। গতবছর ১৪ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত চলা এই সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে ১২ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। এদিকে মুসলিম পক্ষের দাবি, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা আইন অনুযায়ী পুজোর দাবি জানিয়ে এই মামলা ভিত্তিহীন। যদিও হিন্দুপক্ষে দাবি, ১৯৪৭ সালের পরেও এখানে পুজো হয়েছে। প্রমাণ হিসেবে ১২ জন সাক্ষীকে পেশ করা হয়েছিল আদালতে।