অপা’‌য় লেগেছে শনির দশা, কর্তা–গিন্নি না থাকায় অন্ধকারে বীরভূমের বাগান বাড়ি

রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল একটি নাম—‘‌অপা’‌। ২০২২ সালের একুশের জুলাইয়ের পর গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এই দু’‌জনের নামের আদ্যক্ষর নিয়ে বীরভূমে তৈরি হয়েছিল বাড়ি—অপা। এখন দু’‌জনেই জেলে থাকছেন বলে অপা’‌র বাড়িটিতে কেয়ারটেকার ছাড়া কেউ থাকে না। এমনকী এমন পরিস্থিতি যে অপা’‌য় নাকি এখন শনির দশা চলছে। পার্থ–অর্পিতা বারবার জামিন চাইলেও এখনও জেলের বাইরে আসতে পারেননি। তাই শ্রীঘরে থাকার বর্ষপূর্তি হয়ে গিয়েছে।

এদিকে এখন বীরভূমে বিনামূল্যে দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে পর্যটকদের কাছে ‘অপা’। ‘অপা’ আসলে অর্পিতা–পার্থর নামের আদ্যক্ষর। দু’‌জনেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত বলে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০২২ সালের জুলাই মাসে তাঁরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন। তখনই বাংলার মানুষের সামনে আসে ফ্ল্যাট ভর্তি টাকার স্তূপ। তারপর নজরে আসে তাঁদের স্বাদের এই বাগান বাড়ি। কবিগুরুর মাটি শান্তিনিকেতনে ‘অপা’ এখনও কৌতূহলের চরমে রয়েছে। কালের গতিতে কেটে গিয়েছে ১ বছর। এখন তাই বন্ধ অপা পর্যটকদের দর্শনীয় স্থান।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ অন্যদিকে ২০২২ সালের শহিদ দিবসের ঠিক পর দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারপর বান্ধবী অর্পিতাকে গ্রেফতার করা হয়। ফলে গত একবছর ধরে সংসারে কর্তা–গিন্নি নেই। একবছর পরের একুশে জুলাইয়ে টিভির সামনে চোখ রেখেছিলেন জেলবন্দি পার্থ। তখন একের পর এক তাবড় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বক্তব্য রাখছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখা পর্যন্ত নিজেকে ধরে রাখতে পেরে ছিলেন পার্থ। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মঞ্চে ওঠেন এবং নিজের বক্তব্য রাখেন তখন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি একদা মহাসচিব। বাকি বন্দিদের সামনেই হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন। মুখ থেকে শুধু শোনা গিয়েছিল, ‘‌কবে যে মুক্তি মিলবে বুঝতে পারছি না।’‌ এটাই সেদিন ঘটেছিল বলে জেল সূত্রে খবর।

আরও পড়ুন:‌ চারদিন পরই মহরম, শহরকে যানজট মুক্ত রাখতে ট্রাফিক পুলিশ দিচ্ছে টাটকা আপডেট

অপা’‌য় শনির দশা কেন?‌ এই বাগান বাড়িতে এখন কেউ আসে না। এখানে একজন মহিলা কেয়ারটেকার আছেন। কিন্তু কাজ করলেও একবছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। শুধু থাকতে পাচ্ছেন বলে আছেন। এই বাড়িটির বিদ্যুতের বিল বিস্তর বকেয়া। তাই লাইন কেটে দিয়েছে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। এই বিষয়ে কেয়ারটেকার ঝর্ণা দাস সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌আমার বেতন চার হাজার টাকা। যা একবছর ধরে পাচ্ছি না। কোথায় যাব!‌ এখানে তবু থাকতে পাচ্ছি। তাই বাইরে কিছু কাজ করে এখানে রান্না করে খাই। জানি ওনারা জেলে আছেন। কিন্তু আমি কি করব?‌ এখানে বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় লাইন কেটে দিয়ে গিয়েছে। পর্যটকরা এসে এখানে সেলফি তোলেন। খুব আর্থিক কষ্টে আছি। এখন ভগবানই ভরসা।’‌