চালের রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতির মুখোমুখি বাংলার চাষি-ব্যবসায়ীরা

বাসমতী ছাড়া সমস্ত সাদা চালের রফতানি বন্ধ হওয়ায় বিদেশে চালের দাম মাত্রা ছাড়ালেও দেশের খোলা বাজারে ধানের দাম কমছে। বিদেশে চাল রফতানি বন্ধ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলায় রাজ্য সরকারের কাছে সহায়ক মূল্যে (MSP) প্রায় দু’লক্ষ টন ধান বিক্রি করেছেন এ রাজ্যের কৃষকরা। রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্তের ফলে বেশ ভালোই ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।এই ক্ষতির কথা জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিল রাজ্যের চালকল মালিকদের সংগঠন।

চালকল মালিকদের সংগঠনের অন্যতম সক্রিয় সদস্য আব্দুল মালেকের জানিয়েছেন, ‘প্রতি দু’সপ্তাহে এক লক্ষ টন মোটা চাল এবং ২০ হাজার টন গোবিন্দভোগ রফতানি হয়। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৫০০ কোটি টাকার চাল রফতানি হয়। তা আটকে যাওয়ায় ধানের দাম কমছে।’

ঘরোয়া বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র। সেই পরিকল্পনা অনুসারে ভারত থেকে বাসমতী ছাড়া কোনও চাল রফতানি হচ্ছে না। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে আকাল দেখা দিয়েছে চালের। চালের দামও বেড়েছে হুহু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এল নিনোর প্রভাবেই কমেছে চালের ফলন। আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্য দেশজুড়ে চালের ফলন কমার ফলে প্রভাবিত বিশ্ববাজার। তবে দেশে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে চালের দাম।

চালকল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রতি কুইন্টাল মোটা চালের দাম কমেছে প্রায় ১২০টাকা। ২২৬০ টাকা কুইন্টাল চাল এসে দাঁড়িয়েছে ২১৪০ টাকায়। নতুন গোবিন্দভোগের দামও কমেছে প্রতি কুইন্টালে ১৪০ টাকা। ২৫৪০ টাকা থেকে তা নেমেছে ২৪০০ টাকায়। গোবিন্দভোগ চালকল সংগঠনের সক্রিয় সদস্য শ্যামল রায় এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘গত কয়েক দিনে ৫০০ টন চাল বন্দর থেকে ফিরেছে।’ স্বাভাবিক ভাবেই চালের অধিক জোগানের ফলে কমেছে চালের দাম। গোবিন্দভোগ চালের উৎপাদক রেজাউল মল্লিক, শঙ্খ রায়দের মতে, রফতানি বন্ধ হওয়ায় গত এক সপ্তাহে কেউ ধান কিনতে আসেননি।

একই কথা ধান ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা বিশ্বজিৎ মল্লিকের মুখেও। তাঁর বক্তব্য, ‘চালকলগুলি ধান কেনা বন্ধ করেছে। এর বিরূপ প্রভাব সরাসরি চাষিদের উপরে পড়ছে।’ এই বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরেও কথোপকথন চলছে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘এর আগে মুখ্যমন্ত্রী দু’বার চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রকে। এ বার তথ্য-সহ ফের চিঠি দেওয়া হবে।’ এই প্রসঙ্গে রফতানি সংগঠনের পক্ষে সদর্থক প্রতিক্রিয়া মিলিছে। তাঁরা বলেন, এই নিয়ন্ত্রণের কারণে দেশে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।