Science News: কাটাছেঁড়ার দিন শেষ? আলো ও কণা দিয়েই অস্ত্রোপচার হবে? গবেষণায় নয়া পথের হদিশ

ছোঁবে না কোনও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, সূক্ষ্ম অস্ত্রোপচারও হবে কোনও কাটাছেঁড়া ছাড়াই। এমনটা হলে সত্যিই কত ভালো হত বলুন তো! ধরা যাক, আপনার মস্তিষ্কে একটি টিউমার। সেটিকে কেটে বার করতে হলে মাথার ত্বক, খুলি পেরিয়ে তবে ভিতর পর্যন্ত যায় ছুরি, কাঁচি। এবার এমন একটি অস্ত্রোপচার যদি হয়, যাতে কোথাও কোনও কাটাছেঁড়াই হবে না। অথচ নির্বিঘ্নে টিউমারটি কেটে বার করে আনা যাবে? খুব অসম্ভব নয় কিন্তু এই ভাবনা। অন্তত চিকিৎসা বিজ্ঞান ও তার প্রযুক্তি যেভাবে গবেষণা চালাচ্ছে, তাতে আর কয়েক বছরেই এই জিনিস ঘটতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণাও সেই দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে।

(আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটি-র কারণে কি অনেকে চাকরি হারাতে পারেন? বলে দিলেন এর স্রষ্টাই)

এক আন্তর্জাতিক গবেষক দলের এই জাতীয় গবেষণায় আলো ও মৌলের বিশেষ ধর্মকে কাজে লাগানো হয়েছে। সেই দলে রয়েছেন কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের বিজ্ঞানী মহম্মদ হেদায়েতুল্লাহ মীর। গবেষণার মূলে রয়েছে ক্রিস্টাল যৌগ। ক্রিস্টাল হল এমন ধরনের যৌগ যার নির্দিষ্ট আকার রয়েছে যেমন ধরুন চিনি। অন্য দিকে গ্যাস, প্লাস্টিক এই ধরনের যৌগ নয় কারণ এদের কোনও নির্দিষ্ট আকার নেই। এমনই একটি বিশেষ ধরনের ক্রিস্টাল অণু দিয়ে হবে অস্ত্রোপচার।

(আরও পড়ুন: ডায়াবিটিস রয়েছে? ভুলেও করবেন না ৬ ভুল)

কীভাবে সেই অণু শরীরের ভিতর ঢুকবে? কীভাবেই কাজ মিটিয়ে বেরিয়ে আসবে সেটা? শরীরের ভিতরে গোটা পথটা কে তাকে দেখিয়ে নিয়ে যাবে? আলো। এক কথায় আলোই করবে সেই কাজ। আলো কীভাবে এত কাণ্ড ঘটাতে পারে ভাবছেন তো? ঠিক যেভাবে আলোর ছোঁয়াতে ফুল পাপড়ি মেলে ধরে, সেভাবেই। এই ধরনের অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত ক্রিস্টাল অণু আসলে আলোর উত্তেজনায় সাড়া দেয়। অর্থাৎ, আলোকসংবেদী। ক্রিস্টাল যৌগটির সেই আলোকসংবেদী ধর্মকে কাজে লাগিয়েই মিলবে সাফল্য।

প্রসঙ্গত, আলো শুধু নিয়ে শরীরের ভিতরের গন্তব্যস্থলে যাওয়া আসা নয়, চাইলে বিশেষ কায়দায় যৌগকে বাঁকাতে ভাঙতে ও জুড়তে পারে। আর সেই কায়দা কাজে লাগিয়েই চলবে অস্ত্রোপচার। এই অস্ত্রোপচারের পথে এখনও কিছু বাধা রয়েছে। তবে অনেকটা বাধাই পেরিয়ে এসেছেন মীর ও তাঁর দল। তাঁদের গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ‘নেচার’ জার্নাল-এর ‘কমিউনিকেশন কেমিস্ট্রি’-তে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ ধরনের এই যৌগ আসলে জিঙ্ক ধাতুর একটি ক্রিস্টাল। সেই ক্রিস্টাল শরীরের বিভিন্ন স্থানে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া থেকে কৃত্রিম পেশি তৈরির মতো কাজও করবে। তবে তার জন্য আরও কয়েক ধাপের গবেষণা এখনও বাকি।