আফ্রিকা মহাদেশেও মীর সিমেন্ট রফতানির সুযোগ আসবে

সামা-ই জাহির— মীর সিমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের পরিচালক। প্রতিষ্ঠান দুটো দেশের নির্মাণ খাতের নেতৃস্থানীয় অংশীদার। যাত্রা শুরুর পর থেকে মীর গ্রুপ ৫ দশকে বহু উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের কাজ সফলতার সঙ্গে শেষ করেছে। গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সামা-ই জাহির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) শিক্ষক ছিলেন। তিনি বিভিন্ন গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্যবসার দক্ষতা অর্জন করেছেন। আগ্রহের বিষয় শিক্ষা ও কৃষি। অবসরে পড়তে ও গান শুনতে ভালোবাসেন। সম্প্রতি তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, পড়াশোনা, শৈশব ও ভবিষ্যৎ ব্যবসা-পরিকল্পনা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

বাংলা ট্রিবিউন: মীর আক্তার হোসেন প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৮ সালে। সেই মূল প্রতিষ্ঠানের অপারেশন ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আপনি। ব্যবসার সূচনাটা যদি আমাদের বলতেন

সামা জাহির: আজকে আমরা যে অফিসে বসে আছি সেটা মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড, আমি যেখানে বর্তমানে অপারেশন ডিরেক্টর, ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পরেই। এই প্রতিষ্ঠানের শুরু ১৯৬০ সালে। এটি আমার দাদা মীর আকিব হোসেন প্রতিষ্ঠা করেন। উনি মারা যান ১৯৬৯ সালে। তখন আমার বাবা মীর জাহির হোসেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর হন। তিনি তখন কেবল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট থেকে পাস করলেন। উনার সঙ্গে যোগ দিলেন আমার চাচা মীর নাসির হোসেন। ২০০৯ সালে বাবার মৃত্যুর পর আমি দায়িত্ব নেই। আমার চাচা মীর নাসির হোসেন ‌এখন ম্যানেজিং ডিরেক্টর। আমরা পরিচালনা পর্ষদে চারজন আছি। আমার আম্মা সোহেলা হোসেন এবং চাচি মাহবুবা নাসির আছেন। এটা একটি পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানি— ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে। অতএব আমাদের জেনারেল শেয়ারহোল্ডারসও আছেন। ব্যবসাটা ১৯৬০ সাল থেকে বিভিন্ন নির্মাণ এবং অবকাঠামোগত নির্মাণের সঙ্গে জড়িত। আমাদের প্রথম কাজ শুরু হয় রেল কনস্ট্রাকশন দিয়ে। বর্তমানে আমরা সড়ক, সেতু, দালান, এয়ারপোর্ট, পাওয়ার প্লান্ট এবং বিভিন্ন ধরনের প্রাইভেট লার্জ ইনফ্রাস্ট্রাকচারেরও কাজ করে থাকি। সরকারের অবকাঠামোগত কাজে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় নামি, সেখানে আমাদের দর বাছাই হলে কাজগুলো করি। ব্যবসার ধারাবাহিকতার সঙ্গে বিভিন্ন সময় আমার বাবা ও চাচা ব্যবসা সম্প্রসারিত করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে মীর সিমেন্ট, মীর সিরামিক, মীর রিয়েল এস্টেট, মীর টেলিকমসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে টেকনোলজি এবং ইনফরমেশন ক্ষেত্রগুলোতেও আমাদের বিচরণ রয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনাদের নির্মাণ করা স্থাপনাগুলো বেশ নামকরা। যেমনব্রিটিশ দূতাবাস ভবন, আমেরিকান দূতাবাস, রূপসী বাংলা এবং রেডিসন। আপনাদের তৈরি অনেক স্থাপনার নির্মাণ শৈলী অন্যদের থেকে আলাদা। এদিক থেকে আপনাদের পছন্দের দিকটা যদি বলতেন?

সামা জাহির: আমরা স্থাপনার ক্ষেত্রে সাধারণের চেয়ে একটু ভিন্নধর্মী কাজের দিকে ঝুঁকি। এর কারণ হলো নির্মাণ কাজে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আসে, সেগুলো মোকাবিলা করতে হয়। কাজেই এ কাজগুলো বেশ কষ্টসাধ্য। সে কষ্টসাধ্য কাজগুলো করতে যাওয়ার সময় আমরা ভিন্ন মাত্রার কাজের দিকে মনোযোগ দেই। আমরা বিশেষভাবে গর্বিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পেয়ে। এ ধরণের কাজ করে আমরা বৈচিত্র্যের স্বাদ পাই এবং আমাদের অভিজ্ঞতাও বাড়ে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনাদের তিন প্রজন্মের এই ব্যবসা। সেই ষাটের দশক থেকে আজকে পর্যন্ত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের ব্যবসায় নতুনত্ব আর আধুনিকতা এসেছে। সময়োপযোগী বাণিজ্যিক চিন্তার বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ক্ষেত্রে আপনারা কীভাবে কাজ করে থাকেন এবং আধুনিক চিন্তাকে কীভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রূপ দিলেন?

সামা জাহির: একজন ব্যবসায়ী হিসাবে আমি সৌভাগ্যবান। আমার দাদা, বাবা, চাচার পরিশ্রমের সুফল আমি ভোগ করছি। আমি এবং আমার ভাইয়েরা চেষ্টা করি এ ব্যবসাকে যতটা সম্প্রসারিত করা যায়। আমরা যে সুনামের পরম্পরা নিয়ে এসেছি তা এই সম্প্রসারণে অনেকটা সহায়তা করে। দ্বিতীয়ত, আমরা আমাদের ম্যানেজমেন্ট টিমের উপর বহুলাংশে নির্ভর করি। যারা মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তাদের অনেকেই আমাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২৫ থেকে ৩৫ বছর ধরে আছেন। আরও অনেকে আছেন ১০ থেকে ২০ বছরের বেশি, আমরা তাদের কর্মদক্ষতা, তাদের কারিগরি জ্ঞানের ওপর নির্ভর করি। আমরা অত্যন্ত গর্বিত তারা নিরলস পরিশ্রম করে একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন। এতেই ব্যবসার পরিধি বাড়ানো আমাদের জন্য সম্ভবপর হয়।

বাংলা ট্রিবিউন: মীর আখতার হোসেন এখন বিরাট প্রতিষ্ঠান। অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এ প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার অভিমত জানতে চাই

সামা জাহির: দেশের অর্থনীতিতে আমাদের অবদান আসলে দ্বিপাক্ষিক প্রচেষ্টার ফসল। আপনি যদি লক্ষ্য করে থাকেন গত ১০-১৫ বছরে সরকার যে ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটা আমাদের কাজের অনেক সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি সব সময় সেই কাজের মান নিশ্চিত করতে এবং তা সময়ের মধ্যে শেষ করতে। আমাদের পক্ষে থেকে কর্তব্যনিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে কাজ করার সুযোগ এ দ্বিপাক্ষিক অবদানের যৌথ ফল আমরা সবাই ভোগ করছি।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনাদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো গত ১০ বছরে ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক বিস্তার লাভ করেছে। এই বিস্তৃতি কীভাবে হয়েছে?

সামা জাহির: প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যবসাটি বিস্তারের চেষ্টা করি। উদাহরণস্বরূপ আমাদের কনস্ট্রাকশন আছে, তার সঙ্গে সিমেন্ট যায়। যেহেতু আমাদের নির্মাণ দক্ষতা আছে, তাই রিয়েল এস্টেটে আমাদের পদচারণা সম্ভব। আমার বাবা সেখান থেকে শুরু করেছিলেন। আমাদের প্রথম সম্প্রসারণ সেভাবে চিন্তা করি। তারপর দেখি নতুন কী বিনিয়োগ এবং কী ধরনের সম্প্রসারণ সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ প্রযুক্তি খাত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা— সেখানে আমরা দেখি সময়োপযোগী কী আছে। তারপর খাতগুলোতে বিনিয়োগ করি। আমাদের এই বিস্তৃতির যদি রূপরেখা বলেন তাহলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা, তারপর সময়োপযোগী উদ্যোগ।

বাংলা ট্রিবিউন: দেশের বাইরে আপনাদের ব্যবসা বিস্তৃত করার পরিকল্পনা আছে কিনা?

সামা জাহির: এটা অবশ্যই আছে। আমাদের মীর সিমেন্ট রফতানি হয়। এখন করছি প্রতিবেশী রাষ্ট্রে। আমাদের ইচ্ছা আছে এটা আফ্রিকা মহাদেশেও রফতানি করার। সে সুযোগও সামনে আসছে। আপনি যদি প্রযুক্তি খাতে দেখেন— মীর টেলিকমের বহু দেশের সঙ্গে কানেক্টিভিটি আছে। আবার মীর ইনফো সিস্টেমস যদি দেখেন, সে ব্যবসায় আমাদের কানাডা এবং আমেরিকাতে ক্রেতা আছে। আমরা আমাদের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকেও দেশের বাইরে বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি।

বাংলা ট্রিবিউন: বর্তমানে যুব সমাজের বড় একটা অংশ উদ্যোক্তা হতে চায়। আপনাদের এই যে তিন প্রজন্ম ধরে ব্যবসায়িক সাফল্য, তার পিছনের চাবিকাঠি আসলে কী? নতুন যারা এ ধরনের ব্যবসায় আসতে চান, তাদের জন্য কিছু যদি বলতেন?

সামা জাহির: আমি খুবই আনন্দিত হই যখন দেখি নতুন প্রজন্মে এতো উদ্যোক্তা আছে। তারা বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো লক্ষ্য রাখতে যে গত কালের চাইতে আজ আমি বেশি কর্মউদ্দীপনা নিয়ে কাজ করছি কিনা। নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে অনেকেরই কিন্তু অর্থনৈতিক বা উপলব্ধ সম্পদের ঘাটতি থাকতে পারে তবে তাদের উদ্দীপনা, উৎসাহ ও উদ্ভাবনী চিন্তার কোনও ঘাটতি নেই। তাদেরকে আমি বলবো, আমরা খুব ভালো সময়ে আছি এখন। ভালো সময় বলতে পৃথিবীতে নতুন অনেক ব্যবসা স্টার্ট-আপ মডেলে চলে। স্টার্ট-আপ মডেলের সৌন্দর্য হচ্ছে আপনি যদি খুব ভালো একটা চিন্তাকে নিয়ে প্রাথমিক একটা রূপ দিতে পারেন তখন দেখা যাবে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট হবে। এঞ্জেল ইনভেস্টর, প্রাইভেট স্টার্ট-আপ ফান্ড ইকুইটি ইত্যাদি আছে তাদের কাছ থেকে বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনার সম্পদ ঘাটতির একটা সমাধান করতে পারেন এবং দিকনির্দেশনা পেতে পারেন। তাদের থেকে অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। বিশেষ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআইয়ের যে বিস্তার দেখছি এটার যথার্থ সুযোগ তাদের নিতে হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: মূল প্রতিষ্ঠান মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের লোকবল কত? সব মিলিয়ে আপনারা কত সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান করতে পেরেছেন?

সামা জাহির: আমাদের মীর আকতারে এখন প্রায় সাড়ে ১২০০ লোক কাজ করছে। তাদের মধ্যে আমাদের যেমন সুদক্ষ ইঞ্জিনিয়ার আছেন, একাউন্টেন্ট আছেন, মাঠ পর্যায়ে ইকুইপমেন্ট অপারেটর আছেন, তারপর নির্মাণকর্মী আছেন। আর যদি অন্যান্য অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মিলে হিসাব হয় তাহলে প্রায় ২৫০০ থেকে ২৭০০ কর্মী আছে। বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপ করেন মীর সিমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের পরিচালক সামা-ই জাহির

বাংলা ট্রিবিউন: ব্যাংকিং সেক্টরেও আপনাদের ব্যবসা বিস্তৃত। দুটো ব্যাংকের সঙ্গে আপনাদের সম্পৃক্ততা আছে। এখন যে বৈশ্বিক অর্থনীতি একটা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সবাই বলছেউন্নত দেশগুলোও তাদের অর্থনীতি সচল রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে এই সংকট থেকে উত্তরণে কোন বিষয়গুলোতে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন?

সামা জাহির: দেশ হিসেবে আমরা এবং বিশ্ব পর্যায়ে অন্যান্য দেশগুলো খুব সংকটময় পাড় করছে। বৈশ্বিক যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা রয়েছে— রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সেই ধরনের অস্থিতিশীলতার প্রভাব রাষ্ট্রের উপর পড়বেই, আমাদের উপরও পড়ছে। ব্যাংকিং খাতে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিদেশি ব্যাংকে আমাদের এলসি খোলার ব্যাপারে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ঋণের সুদ হারের যে সীমারেখা নির্দিষ্ট করা ছিল এটাও তুলে দেওয়া হয়েছে এবং সেটা দেশের দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধি স্থিতিশীল করার জন্য করা হয়েছে, মনিটরিং পলিসি হিসেবে। সে ক্ষেত্রে কী কী করণীয় তা যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন— আমি বলবো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আমাদের বাজেটটা আরও একটু সংক্ষিপ্ত হওয়া দরকার ছিল। তার কারণ হচ্ছে শুধু তো আমি ব্যবসায়ী হিসেবে ঋণ গ্রহণ করছি না সরকারও ঋণ গ্রহণ করছে। তাতে কিন্তু ঋণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, সুদের হার বেড়ে যাচ্ছে। সেটা একদিকে হয়তো মূল্যবৃদ্ধি করছে তবে আমদানিতে হ্ৰাস টেনে ধরেছে। আর আমরা ব্যবসায়ী হিসেবে যা করতে পারি তাহলো আমাদের দেশের দিকে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহারে আরও সজাগ হতে হবে। দেখতে হবে আমরা দেশীয় পর্যায়ে কীভাবে আরও উৎপাদনশীল হতে পারি। উদাহরণস্বরূপ কৃষি খাতে এখনও উন্নয়ন সম্ভব। এক ফসলি জমিটাকে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও উৎপাদনশীল করা সম্ভব যেমন হাইড্রোপনিক্স আছে, ভার্টিকাল ফার্মিং আছে। যার মাধ্যমে ফসলের জমিটাকে দুফসলি বা তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করতে পারি। আর ভোক্তা হিসেবে আমাদের দেশি পণ্যের প্রতি আরও ঝুঁকতে হবে।

বাংলা ট্রিবিউনছোটবেলার এমন কোনও স্বপ্ন বা ইচ্ছে আছে কিনা যা এখন পর্যন্ত পূরণ করতে পারেননি। আপনাকে তাড়িত করার মতো কোনও স্বপ্ন বা ইচ্ছার বিষয়ে যদি আমাদের বলতেন

সামা জাহির: আপনি এটা খুব চমৎকার একটা প্রশ্ন করেছেন। আমি বিনোদনের সঙ্গে সবসময় থাকতে চেয়েছি। তা হচ্ছে মিউজিক এবং ফিল্ম। এ দুটোতে আমার খুব আগ্রহ। আমি মনে করি—সে যেই হোক তরুণ, যুবক বা প্রবীণ কারো জন্যই সময় চলে যায় না। ওই স্বপ্নের জন্য এখন আমি কিছুটা কাজ শুরু করেছি। সামনে কিছু গান, কিছু চলচ্চিত্র আনতে চাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি— যেটা এখন বাস্তবায়নের পথে।

বাংলা ট্রিবিউন: যদি ব্যবসায়ী না হতেন, তাহলে কী হতেন? মানে উত্তরাধিকার সূত্রে যা পেয়েছেন তার বাইরে

সামা জাহির: আমি শিক্ষক হতাম। এর প্রতি আমার ঝোঁক আছে।

বাংলা ট্রিবিউন: বৈশ্বিক যে সংকট তার ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও লেগেছে। সংকট যখন থাকে তখন সম্ভাবনাও থাকে। সরকার সংকট কাটিয়ে উঠতে অনেক পদক্ষেপ নেওয়ার  কথা জানিয়েছে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনার কাছে এই সংকট থেকে উত্তরণের বা সম্ভাবনার দিকগুলো যদি আমাদের বলেন।

সামা জাহির: বৈশ্বিক যে সংকট এখন চলমান তার প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের উপর পড়বে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের ব্যবসায়ীদের জন্য তা সংকটময়। যারা ব্যাংক থেকে সুদে টাকা নেয়নি তাদের পরিত্রাণ কিছুটা সহজ হবে। যারা ব্যাংক থেকে সুদে টাকা নিয়েছে তাদের জন্য সরকারের কিছু করা দরকার বলে মনে করি। যারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের ঋণ নিয়েছে তাদেরকে সরকার একটা প্রণোদনা প্যাকেজ দিতে পারে। এটা সরকার বিবেচনায় আনলে দেখা যাবে যে এর সুফল অনেক বেশি।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন।