পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়নে বোর্ড গঠিত, দায়িত্বে তৃণমূলের নবাগত মুখ সমিরুল ইসলাম

এবার তৃণমূলের রাজ্যসভায় পাঠানো নতুন তিন মুখের মধ্যে সবচেয়ে চর্চায় রয়েছেন বীরভূমের কৃষক পরিবারের সন্তান এবং সমাজকর্মী সামিরুল ইসলাম। তিনি কর্মসূত্রে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক। তিনি একজন অরাজনৈতিক সংগঠক। তিনি রাজ্যসভায় যাওয়ার পরে উল্লাসে মেতে ওঠেন বীরভূমসহ রাজ্যবাসী। এবার তাঁকে আরও বড় দায়িত্ব দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামিরুলকে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হল। রাজ্যের শ্রম দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ কথা ঘোষণা করা হয়। এই উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য রয়েছেন বিধায়ক তাপস রায়, শ্রম দফতরের প্রধান সচিব সহ ১০ জন। এবার এই বোর্ডের চেয়ারম্যানের ভূমিকা পালন করবেন সামিরুল ইসলাম।

আরও পড়ুন: কৃষকের সন্তান, IIT প্রাক্তনী-কে এই তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রার্থী সামিরুল ইসলাম

এই দায়িত্ব পাওয়ার পরে খুশি সমিরুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থে বিগত বছরগুলিতে কাজ করে এসেছি। আগামী দিনগুলিতেও একইভাবে কাজ করে যাব।’ তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক সমাজ থেকে উঠে এসেছি। ফলে তফসিলি জাতি, আদিবাসী, সংখ্যালঘু, কুড়মি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের কথা অনুভব করতে পারি। সেই জায়গা থেকে আগামী দিনে তাঁদের হয়ে কাজ করব, রাজ্যসভায় তাদের হয়ে সরব হব।’ পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এর আগে করোনা পরিস্থিতিতে তিনি পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়ে কাজ করেছেন। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে মনে করছে বিশিষ্ট মহল।

উল্লেখ্য, ব্যক্তিগতভাবে সামিরুল কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তাঁর স্বপ্ন অনগ্রসর শ্রেণিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, বিপদে আপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি সংস্কৃতি মঞ্চ গড়ে তুলেছেন। ১০ বছর ধরে রয়েছে তাঁর এই সংগঠন। সমাজসেবামূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত সামিরুল। লকডাউন পর্বে তিনি বীরভূমের মহম্মদ বাজারের পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি তাঁদের নানাভাবে সাহায্য করেছিলেন। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে ‘নট টু ভোট বিজেপি’ স্লোগান তুলেছিলেন। শুধু তাই নয়, বহু আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সামিরুল। এনআরসি, কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে তিনি যুক্ত থেকেছেন। 

প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালে বীরভূমের হাসন বিধানসভা কেন্দ্রের দুনিগ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সামিরুল। দুনিগ্রাম হাইস্কুলে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ার পর রামপুরহাট হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি কলকাতায় যান। মণিন্দ্র নন্দী কলেজ থেকে তিনি রসায়নে স্নাতক হন। পরে দিল্লি আইআইটি থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর হন। বর্তমানে তিনি গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের রসায়নের অধ্যাপক। অধ্যাপনার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত।