থানার লকআপে পিটিয়ে যুবককে মারার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে, রণক্ষেত্র নবগ্রাম

এবার নবগ্রাম থানার লকআপে এক অভিযুক্ত যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল খোদ থানার ওসির বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে গোবিন্দ ঘোষ (৩০) নামে ওই যুবককে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারপর শুক্রবার বেশি রাতে থানার ভিতরেই তাঁকে বেধড়ক পেটালে মৃত্যু হয় ওই যুবকের বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনার পর তপ্ত হয়ে উঠেছে থানা চত্বর। গ্রামবাসীরা তুমুল বিক্ষোভ দেখালে বাতাবরণ গরম হয়ে ওঠে।

আজ শনিবার এই ঘটনা চাউর হয়ে গিয়েছে। তাতে থানার সামনে অনেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানা চত্বর। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে করা হল লাঠিচার্জ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। শুধু তাই নয়, উত্তেজিত জনতাকে আটকাতে থানার গেটের সামনে কাঁচ ভেঙে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে রাখা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এই ঘটনা নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিং সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌নবগ্রামে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে।’‌

ঠিক কী অভিযোগ উঠেছে?‌ এদিকে মৃত যুবকের নাম গোবিন্দ ঘোষ (‌৩০)‌। বাড়ি নবগ্রাম থানার সিঙ্গার গ্রামে। ওই যুবক নবগ্রাম এলাকার সেনা ছাউনিতে দিন মজুরের কাজ করতেন। সম্প্রতি গোবিন্দর প্রতিবেশীর বাড়িতে চুরি যায় বেশকিছু সোনা এবং নগদ টাকা। সেই ঘটনায় গৃহকর্তা সাতজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই তালিকায় নাম ছিল গোবিন্দ ঘোষের। পুলিশ বাকি ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে গোবিন্দকে তুলে নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, চুরির ঘটনায় গোবিন্দ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার থানায় ডেকে নিয়ে যায় নবগ্রাম থানার পুলিশ। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের পরও তাঁকে ছাড়া হয়নি।

আরও পড়ুন:‌ বেহালার রণক্ষেত্রের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত?‌ নির্দেশিকা জারি করে খুঁজছে পুলিশ

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ বৃহস্পতিবার নবগ্রাম থানায় দেখা করতে গেলে পরিবারের সদস্যদের বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কিন্তু শুক্রবার রাতে জানাজানি হয়ে যায় গোবিন্দর মৃত্যু হয়েছে। তাতেই রহস্যের দানা বেঁধেছে। থানার লকআপে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এই খবর পেয়েই গোবিন্দর বাড়ির লোকজন থানা ঘেরাও করে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁর পরিবারের সদস্য ও গ্রামের লোকজন মিলিয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ জড়ো হন থানার সামনে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। তাতে জনতাও ক্ষেপে ওঠে এবং পাল্টা আক্রমণে নামেন। তখন কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয় এবং কাঁচের বোতল ভেঙে রাস্তায় ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। আজ, শনিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। মৃত গোবিন্দের বাবা বলেন, ‘‌আমার ছেলেকে ওসি পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।’‌