Article 370 Case in Supreme Court: ভারতের সঙ্গে শর্তহীন ভাবে যুক্ত হয় জম্মু-কাশ্মীর, ৩৭০ ধারা মামলায় বললেন CJI

জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরোধিতায় করা আবেদনগুলির প্রেক্ষিতে শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাতেই এবার গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করল শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্ট বলে, ভারতের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের সংযুক্তিকরণ শর্তসপেক্ষ ভাবে হয়নি। বরং শর্তহীন ভাবে ভারতের সঙ্গে পূর্ণ সংযুক্তিকরণ হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের। উল্লেখ্য, গতকাল এই মামলার শুনানি চলাকালীন এক আবেদনকারীর আইনজীবী জাফর শাহ দাবি করেন, জম্মু ও কাশ্মীরকে যদি ভারতের সঙ্গে সম্পূর্ণ রূপে যুক্ত করতে হত, তাহলে সংযুক্তিকরণের চুক্তিতে সই করানো উচিত ছিল। ভারতের অন্যান্য প্রিন্সলি স্টেটের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। আর এরই জবাবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘একটা জিনিস স্পষ্ট যে ভারতের সঙ্গে শর্তহীন ভাবে যুক্ত হয় জম্মু-কাশ্মীর। সেই সংযুক্তিকরণ শর্তসাপেক্ষ ছিল না। এখানে একমাত্র প্রশ্ন হল, সংসদ যা করেছে, তা করার অধিকার তাদের রয়েছে কি না।’

২০১৯ সালের ৫ অগস্টের আগে পর্যন্ত বিশেষ মর্যাদা ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের। সেখানের নিজেস্ব সংবিধান ছিল। ছিল আলাদা পতাকাও। তবে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর সেই সংবিধান অকার্যকর হয়েছে। এই নিয়ে গত পরশু শীর্ষ আদালত জানায়, জম্মু ও কাশ্মীরের যে সংবিধান ছিল তা ভারতের সংবিধানের ওপরে নয়। শীর্ষ আদালত জানায়, ভারতের সংবিধান গোটা দেশে প্রযোজ্য। ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে যখন জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল, তখন এই এলাকাও ভারতের সংবিধানের বিধানের অন্তর্গত চলে আসে।

সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারীদের যুক্তি ছিল, ৩৭০ ধারা আইনত প্রত্যাহার করতে জম্মু ও কাশ্মীরের গণপরিষদকে সিদ্ধান্ত নিতে হত। ভারতের সংবিধানের অধীনে একতরফা ভাবে সংসদে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এর প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বলে, আমাদের সংবিধানে জম্মু ও কাশ্মীরের গণপরিষদের উল্লেখ রয়েছে। তবে ১৯৫৭ সালের ২৬ জানুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান কার্যকরের পর ভারতীয় সংবিধানে সেখানকার গণপরিষদের কোনও উল্লেখ ছিল না। আমাদের সংবিধান একটাই সংবিধানের কথা বলে।

এর আগে ৩৭০ ধারা ইস্যুতে গণভোটের আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। সিব্বল দাবি করেছিলেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার তখনই সম্ভব যখন মানুষ সেটা চাইছে। তিনি বলেন, ‘মহামান্য আদালতের নিশ্চয় ব্রেক্সিট মনে আছে। কী হয়েছিল? সেখানেও গণভোট চাওয়ার কোনও সাংবিধানিক বিধান ছিল না। তবে যখন কোনও সম্পর্কে ছেদ ঘটাতে চান, তখন মানুষের মত জানাটা খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ এই ধরনের সিদ্ধান্তের মূলে মানুষই রয়েছে।’ তবে এই পরামর্শর জবাবে সুপ্রিম বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, ব্রেক্সিটের মতো গণভোট এদেশে সম্ভব নয়। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত বলে, ‘সেদেশের তৎকালীন সরকার রাজনৈতিক ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোট করিয়েছিল। তবে আমাদের সাংবিধানিক কাঠামোতে এরকম কোনও বিধান নেই।’ পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট এও প্রশ্ন করে, যদি আইন প্রণেতারা ৩৭০ ধারা এবং জম্ম-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা চিরকাল অক্ষুণ্ণ রাখতে চাইত, তাহলে বিগত ৬ দশকে কেন সংবিধান সংশোধন করা হল না?