Nandigram: সতেরোয় পাঁচ, নন্দীগ্রামে হাল আরও খারাপ হল তৃণমূলের

বিধানসভা নির্বাচনের পর পঞ্চায়েত ভোটেও নন্দীগ্রামে খেল দেখালেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের ১৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১১টির দখল নিল বিজেপি। এছাড়া বিজেপির সমর্থনে ১টি পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল। নন্দীগ্রামে তৃণমূল নিজের ক্ষমতায় দখল করেছে মাত্র ৫টি পঞ্চায়েত। এই ফলের জন্য নন্দীগ্রামবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওদিকে ফের একবারে হারে হতাশার ছায়া তৃণমূলের অন্দরে।

নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকার ১৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১১টি পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে বিজেপি। মহম্মদপুর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্যানেলকে হারাতে শেখ সুফিয়ানের জামাই হাবিবুরকে সমর্থন জানিয়েছে তারা। ফলে গোটা নন্দীগ্রামে মাত্র ৫টি পঞ্চায়েতে নিজেদের পছন্দের প্রধান বসাতে পেরেছে তৃণমূল।

নন্দীগ্রামে দলের এই দশার জন্য তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দায়ী করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তবে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ তারা। নন্দীগ্রামের এক তৃণমূল নেতা জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী এখান থেকে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই এখানে তৃণমূলের পতনের শুরু। স্থানীয় নেতাদের ওপর ভরসা না করে কলকাতা থেকে নেতা পাঠিয়ে নন্দীগ্রামকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যে এমন সব নেতা রয়েছেন দলের মধ্যেই যাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যার জেরে স্থানীয় নেতারা দলের থেকে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছে। তার ওপরে রয়েছে IPAC-এর অত্যাচার।

ওই তৃণমূল নেতা বলেন, নন্দীগ্রামে সংগঠনের দায়িত্ব যাদের দেওয়া হয়েছে তারা নন্দীগ্রামের কিছুই চেনে না। দল এখানে করপোরেট কায়দায় চলছে। অন্য কোথাও এই ফরমুলা চলবে কি না জানি না, তবে নন্দীগ্রামসহ পূর্ব মেদিনীপুরের কোথাও এর সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

নন্দীগ্রামে হারের পর প্রকাশ্যে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর এজেন্ট শেখ সুফিয়ানকে ভর্ৎসনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বাড়ি নিয়েও কথা শুনতে হয়েছে। এর জেরে শেখ সুফিয়ানের সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়েছে। বসে গিয়েছেন তাঁর অনুগামীরাও। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুফিয়ানকে টিকিট দিয়েও ফিরিয়ে নিয়েছে দল। যার জেরে অপমানিত হয়েছেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা।

তার ওপরে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ জেলা থেকে রাজ্যে। জেলে যেতে হয়েছে মন্ত্রীকে, উদ্ধার হয়েছে টাকার স্তুপ, জেলবন্দি দলের একাধিক বিধায়ক। সাধারণ মানুষের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূল কর্মীদের। সব মিলিয়ে আগামীতেও নন্দীগ্রামে তৃণমূলের উত্থানের কোনও আশা দেখতে পাচ্ছেন না দলের বহু নেতা-কর্মীই।