মোদী ভালো, বিশ্বভারতীর উপাচার্য খারাপ! ঘরের লোককেই কাঠগড়ায় তুলে বড় চাল অনুপমের

বিজেপির জাতীয় সম্পাদকের পদ পেয়েছেন তিনি। বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ। এবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। এর আগেও নানা ধরনের মন্তব্য করে বিতর্ককে উসকে দিয়েছিলেন তিনি। এবার ফের তিনি স্বাধীনতা দিবসেও সেই বিতর্কে যেন ঘি ঢাললেন।

আসলে সম্প্রতি ফেসবুক পোস্টে এক ছাত্রী যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন। এনিয়ে অনশনে বসেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। সোমবার বিশ্বভারতীর সংগীত ভবনের মূল মঞ্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং কর্মীদের নিয়ে অনশন শুরু করেন উপাচার্য। এই ঘটনার সঙ্গে এক অধ্যাপক জড়িত বলে অভিযোগ। এই পোস্টের প্রতিবাদ জানিয়েই অনশনে বসেন উপাচার্য। সেই প্রসঙ্গ তুলে উপাচার্যকে তুলোধোনা করেন অনুপম হাজরা।

তিনি বলেন,মাঝেমাঝে কি হয় আমরা মাসে একদিন করে উপোস করি। যাতে বদহজম, পেটখারাপ এগুলো না হয়। তাই এগুলো উনি করতেই পারেন। ওঁর মেয়াদকাল শেষ হয়ে আসছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নেকনজরে থেকে যাতে মেয়াদকাল বাড়ানো যায় সেই কারণে উনি এই কাজ করেন।

এখানেই থামেননি অনুপম। তিনি বলেন, যেদিন থেকে বিশ্বভারতীতে এই উপাচার্য এসেছেন সেদিন থেকে আমাদের মতো প্রাক্তনীদের কাছে যে অভিযোগ আসে তা অত্যন্ত লজ্জার। আরও খারাপ লাগে যে বিশ্বভারতীর আচার্যের নাম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিশ্বভারতীয় উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে বোলপুরের মানুষ ভাবেন যে এতে হয়তো মোদিজীর সায় আছে। কিন্তু সেটা একেবারেই বাস্তব ঘটনা নয়। আমার কাছে তার বেশকিছু প্রমাণও আছে। প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে পরামর্শ দেন এবং আমি তার সাক্ষী।

এদিকে এতদিন তৃণমূল বার বার অভিযোগ তুলত বিশ্বভারতীর উপাচার্য আসলে বিজেপির কাছের লোক। সেকারণেই তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন। তবে সেই ঘরের লোককেই কোণঠাসা করলেন অনুপম। তিনি বলেন, শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক, প্রাক্তনী সবাইকে তিনি আলাদা করে রেখেছেন।

সেই সঙ্গেই যাদবপুর প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, তৃণমূলের শাসনকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের অনুপ্রেরণায় যাদবপুরটাও একটা পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে। তাঁর মতে, যাদবপুরের ঘটনায় সামনে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন থাকলেও পেছন থেকে অনুপ্রেরণা ছিল তৃণমূলের।

একেবারে চাঁচাছোলা আক্রমণ অনুপমের। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বিশ্বভারতীকে কেন্দ্র করে বার বার যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে, অমর্ত্য সেনকে কেন্দ্র করে যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন উপাচার্য তাতে আখেরে অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির। কারণ অনেকের মতে উপাচার্য নাকি বিজেপি ঘনিষ্ঠ। তবে এদিন অনুপম অবশ্য অত্য়ন্ত কৌশলে উপাচার্যের ঘাড়ে সব দায় চাপিয়ে হাত ধুয়ে ফেললেন। অতীতেও তিনি এই অবস্থান বজায় রেখেছিলেন।