মঙ্গলও ভিজত বৃষ্টির জলে, হত ঋতু পরিবর্তন, বলছেন নাসার বিজ্ঞানীরা

মঙ্গল গ্রহেও কি এককালে ছিল শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা? ছিল প্রাণের স্পন্দন? বিজ্ঞানীদের ধারণা অতীতে কোনও এক সময় মঙ্গল গ্রহেও ছিল ঋতুচক্র। বিজ্ঞানীদের অনুমান, হয়তো কোনও সময়ে বসবাসের যোগ্য ছিল লাল এই গ্রহ। সম্প্রতি মঙ্গলগ্রহ অভিযানে যাওয়া নাসার মহাকাশযান ‘কিউরিওসিটি’ কিছু ফাটলের ছবিগুলো তুলে ধরে। আর এই ফাটলগুলিই নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে গবেষণার জন্য। 

ফাটলগুলো বিশদে পর্যবেক্ষণ করে ফ্রান্স, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন জল ছিল ওই ফাটলগুলিতে। পরবর্তী সময়ে তা বাষ্প হয়ে উবে যায়। জল জমা ও বাষ্পীভূত হওয়ার ফলেই এই ফাটলগুলির সৃষ্টি বলে মত বিজ্ঞানীদের। এই প্রক্রিয়া কোনও এক সময় নিয়মিত ভাবেই মঙ্গলের বুকে দেখা যেত অনুমান তাদের। এর জেরেই ফাটলগুলো সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।

(আরও পড়ুন: JU Student Death: প্রকাশ্যে JUর মৃত ছাত্রের রহস্যময় চিঠি, জোর করে লেখানো হয়েছিল, আদালতে বলল সাক্ষী)

বিজ্ঞানের বিখ্যাত জার্নাল নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত এক রিপোর্টে মঙ্গল গবেষণারত বিজ্ঞানীরা বলেন, পৃথিবীতে মাটির ফাটলগুলো সৃষ্টির পরবর্তী সময়ে ইংরেজি ‘টি’ (T)-এর আকৃতির ছিল বলে ধারণা করা হয়। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষার চক্রাকার আবর্তনের কারণে এই ফাটলগুলো আকারে পরিবর্তন করে ইংরাজি ‘ওয়াই’(Y) আকৃতির রূপ নিয়েছে। মঙ্গলের ওয়াই আকৃতির ফাটলগুলো বিশ্লেষণ করে ভূ-তাত্ত্বিক ও মহাকাশ গবেষকরা বলছেন গ্রহটিতে একসময় পৃথিবীর মতো গ্রীষ্ম, বর্ষা ঋতুগুলি বিরাজ করত। এই ফাটলগুলো ভূপৃষ্ঠের মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার নীচে অবস্থিত হওয়ায় মনে করা হচ্ছে এক সময়ে মঙ্গলে দ্রুত ঋতু পরিবর্তন হত। হয়তো সেসময়ে প্রাণচঞ্চল গ্রহ ছিল মঙ্গল।

মঙ্গলের মাটির ফাটল সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যুক্ত বিজ্ঞানী নিনা লানজা। এই প্রসঙ্গে নিনা জানিয়েছেন, মঙ্গলের মাটির এই ফাটলগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে একসময়ে মঙ্গলে জলের অস্তিত্ব ছিল। এখন প্রশ্ন, কোনও একসময়ের জলে সিক্ত মঙ্গল কীভাবে আজকে এমন শীতল ও শুষ্ক গ্রহে পরিণত হল? জল শুকিয়ে যাওয়ার প্রমাণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা এই ফাটলগুলিকে চিহ্নিত করছেন। মঙ্গলে তরল জল যে ছিল, তা প্রায় নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় অনুমান সময়টা আজ থেকে প্রায় ৩০ হাজার কোটি বছর আগে।