জাহাজ নির্মাণকারীদের ঋণ বিশেষ সুবিধায় পুনঃতফসিলের সুযোগ

জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নেওয়া ঋণের খেলাপি কমানো ও ঋণের অর্থ আদায় নিশ্চিত করতে পুনঃতফসিলের বিশেষ সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থাৎ আড়াই শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে পারবে আর্থিক গ্রাহক। দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিল করতে পরবে।

রবিবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দিয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) পাঠানো এই নির্দেশনায় বলা হয়, জাহাজ শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, রফতানি আয় ও কর্মসংস্থান বাড়ানো ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে ‘জাহাজ নির্মাণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২১’ প্রণয়ন করেছে সরকার। তবে নানাবিধ নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে রফতানিমুখী ও স্থানীয় জাহাজ নির্মাণকারী ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের নগদ প্রবাহ কমে গেছে। এর প্রভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না।

এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের অনাদায়ী ঋণ আদায় ও খেলাপি ঋণ কমাতে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের ঋণ পরিশোধ প্রক্রিয়া সহজ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী ও স্থানীয় জাহাজ নির্মাণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের কেসের গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার অনুযায়ী চলতি বছরের ৩০ জুন বিদ্যমান ঋণের স্থিতির সুদ ও আসলের জন্য দুটি আলাদা হিসাব করতে হবে। সুদ বাবদ অর্থ সুদবিহীন ব্লক হিসাবে রাখতে হবে এবং আসল বাবদ পাওনার ওপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সুদ আরোপ করতে পারবে। এতে আরও বলা হয়েছে, ২ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ১০ বছরে আদায়যোগ্য ধরে ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, গ্রেস পিরিয়ড শেষে (সমাপনান্তে) প্রথমে আসল আদায় করতে হবে। এরপর ব্লক হিসাবে রাখা সুদ আদায় করবে। তবে কোনও গ্রাহক চাইলে গ্রেস পিরিয়ডের মধ্যেও আসল এবং সুদের অর্থ পরিশোধ করতে পারবে। এ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২.৫০ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট আদায় করতে হবে। তবে জাল-জালিয়াতির ঋণ এই সুবিধা পাবে না।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসল ও সুদ বাবদ পাওনা অর্থ আদায়ে ব্যর্থ হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে ঋণ আদায় করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এই সার্কুলার জারির তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ডাউনপেমেন্ট বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ জমা দিয়ে গ্রাহককে সুবিধা নিতে আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে গ্রাহকের আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে।