যাদবপুরে ছাত্র-মৃত্যুর রেশ এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালের হস্টেলে নার্সিং পড়ুয়ার মৃতকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। হস্টেলের চারতলার শৌচালয় থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় নার্সিং পড়ুয়ার। এক্ষেত্রেও কী ব্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে? তাই নিয়ে প্রশ্ন মাথাচারা দিচ্ছে। যদিও একাংশের দাবি, নার্সিং পড়ুয়াদের পড়াশোনার চাপ বেশি থাকে। ফলে ছাত্রীটি সেক্ষেত্রে আত্মহত্যাও করে থাকতে পারে। তবে আদৌও কী ঘটেছিল? তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ভবানীপুর থানার পুলিশও এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আজ ওই ছাত্রীর দেহের ময়না তদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: এসএসকেএম-এর হস্টেলের বাথরুম থেকে নার্সিং পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার
নার্সিংয়ের ওই পড়ুয়ার নাম সুতপা কর্মকার। তিনি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বাসিন্দা। এসএসকেএমের লিটন হস্টেলে থাকতেন ওই ছাত্রী। বুধবার গভীর রাতে হস্টেলের চারতলা শৌচালয় থেকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন অন্যান্য আবাসিকরা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, গত ৪ বছর ধরে কলকাতায় থাকছিলেন সুতপা। তাঁর বাবা সুদমা কর্মকার একজন স্বর্ণকার এবং মা বেলা কর্মকার গৃহবধূ। সুতপাই ছিলেন তাঁর পরিবারের একমাত্র সন্তান। বুধবার সকাল থেকেই তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না বলে দাবি করেছেন অন্যান্য আবাসিক।
তাঁদের আরও দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরে অন্যমনস্ক দেখাচ্ছিল সুতপাকে। ফলে সে ক্ষেত্রে এটি আত্মহত্যা কিনা তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে হাসপাতালের সুপার পিযুষকান্তি রায় জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এসএসকেএমের হস্টেলে ব়্যাগিংয়ের মতো কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে সে ক্ষেত্রে ব়্যাগিংয়ের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল সুপার। তবে ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই হাসপাতালের তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতাল সুপার, নার্সিং সুপার এবং একজন অধ্যাপক রয়েছেন এই তদন্ত কমিটিতে। এছাড়া ভবানীপুর থানার পুলিশ এই ঘটনায় আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ছাত্রীর দেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও তাঁর পরিবারের সদস্যরা কলকাতায় পৌঁছতে না পারায় তা সম্পন্ন হয়নি। ফলে আজ শুক্রবার ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। এক্ষেত্রে মানসিক চাপে পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছে? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে? তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এর জন্য তাঁর সহপাঠিনীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।