নাবালিকার খুনির ফাঁসির সাজার দাবিতে পাহাড়ে বনধ সর্বাত্মক, চলছে শুধু সরকারি বাস

শিলিগুড়ি লাগোয়া মাটিগাড়ায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে নৃশংসভাবে মাথা থেঁতলে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার অভিযুক্ত আব্বাসের ফাঁসির সাজার দাবিতে সর্বাত্মক বনধ চলছে দার্জিলিং পাহাড়ে। শনিবার ১২ ঘণ্টার পাহাড় বনধ ডাকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বনধকে সমর্থন জানায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, জিএনএলএফ, হামরো পার্টি ও সিপিআরএম। বনধের জেরে শনিবার সকাল থেকে দার্জিলিং পাহাড়ের সমস্ত দোকান – পাট, বাণিজ্যিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। রাস্তায় চলছে শুধু সরকারি বাস।

গত সোমবার স্কুল থেকে ফেরার পথে খুন হন মাটিগাড়ার বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পরনে ছিল স্কুলের পোশাক। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি না ফেরায় তাঁকে খুঁজতে বেরোন পরিবারের সদস্যরা। তখন তাঁরা জানতে পারেন, বাড়ি থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে এক কিশোরীর আর্তনাদ শোনা গিয়েছে। সেখানে গিয়ে কিশোরীর রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। তাঁকে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ওই রাতেই মূল অভিযুক্ত আব্বাসকে মাটিগাড়ার লেনিন কলোনি থেকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। জেরায় অপরাধের কথা স্বীকার করে ধৃত। জানায়, স্কুল থেকে ফেরার সময় নাবালিকাকে পরিত্যক্ত ওই ঘরে নিয়ে যায় সে। সেখানে নাবালিকাকে সেধর্ষণের চেষ্টা করে। নাবালিকা বাধা দিলে তাঁকে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করে সে।

এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই লেনিন পল্লিতে অভিযুক্ত আব্বাসের বাড়িতে ভাঙচুর চালান স্থানীয়রা। বুধবার শহরে মিছিল করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। অভিযুক্তের ফাঁসির সাজার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে তারা। শুক্রবার একই দাবিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ডাকা শিলিগুড়ি বনধে মিশ্র প্রভাব পড়ে। সেদিনই শনিবার ১২ ঘণ্টার পাহাড় বনধের ডাক দেয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।

শনিবার বনধের জেরে দার্জিলিং পাহাড়ের রাস্তা ঘাট ছিল একেবারে শুনশান। বন্ধ ছিল সমস্ত দোকানপাট। বনধের জেরে শিলিগুড়ি ফিরতে সমস্যায় পড়েন কিছু পর্যটক। তবে সরকারি বাস চলাচল করেছে। তাতে বাধাও দেননি কেউ।

শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, দার্জিলিং এখন শান্ত। এখন বনধ ডাকার মানে হয় না। মুখ্যমন্ত্রী মাটিগাড়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।