‘প্রসূতির মৃত্যুতে হুমকি’, আতঙ্কে আদালতে চিকিৎসক, পুলিশকে পদক্ষেপের নির্দেশ

রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকরা প্রায়ই রোগী পরিবারের হাতে হেনস্থার শিকার হয়ে থাকেন। সেরকমই এক প্রসূতির মৃত্যুকে ঘিরে লাগাতার হেনস্থার শিকার হচ্ছেন এক চিকিৎসক। সেই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক চিকিৎসক। তাঁর মামলায় হাইকোর্ট পুলিশকে হেনস্থা আটকানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে নতুন করে যাতে সমস্যা না হয়, সে বিষয়টিও পুলিশকে দেখতে হবে জানিয়েছে আদালত। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন চিকিৎসক। সেই মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাছাড়া চার্জশিটও জমা দিয়েছে।

আরও পড়ুন:ডাক্তার ইঞ্জেকশন দিতেই কিশোরীর মৃত্যু, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভ

মামলার বয়ান অনুযায়ী, চিকিৎসকের নাম দীপায়ন তরফদার। সন্তান প্রসবের পর মায়ের প্রাঙ্কিয়াসের জটিল সমস্যা ধরা পড়ে। এই রাজ্যের চিকিৎসায় কাজ না হওয়ায় দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ওই মহিলাকে। কিন্তু, তাতেও সুফল মেলেনি। শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির। সেই ঘটনায় মৃতের পরিবারের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপায়নের ওপর। রোগী মৃত্যুর পরেই ওই চিকিৎসককে লাগাতার হেনস্থা করছে মৃতের পরিবার। তবে তারা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় কোনও অভিযোগ জানায়নি। তা সত্ত্বেও এই ঘটনায় বহরমপুরের ওই চিকিৎসক দীপায়ন তরফদারকে প্রতিনিয়ত হেনস্থা করে চলেছে রোগীর পরিবার। সেই ঘটনায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চিকিৎসক। তাঁর হয়ে মামলা করেন আইনজীবী আর্যক দত্ত এবং অরিন্দম দাস।

 আদালতে তাঁদের অভিযোগ, স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ওই তরুণীর সন্তানের জন্মের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও অপারেশন করেছিলেন। কিন্তু প্রাঙ্কিয়াসের সমস্যা একেবারেই আলাদা। অথচ সেই রোগে মৃত্যুর জন্য মৃতের পরিবার চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। তারও আগে তাঁর থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছে রোজই হুমকি ফোন আসছে। তাঁর পরিবারের লোকজন রাস্তায় বেরোলে শুনতে হচ্ছে কুকথা। সমাজ মাধ্যমেও ওই চিকিৎসক সম্পর্কে নানান রকম অসম্মানজনক কথাবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। এই থেকে নিষ্কৃতি পেতে ওই চিকিৎসা ইতোমধ্যে বহরমপুর থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু, তারপরেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। চরম আতঙ্কে দিন কাটছে ওই চিকিৎসক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ওই চিকিৎসকের হেনস্থা আটকাতে পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। পুলিশও আশ্বস্ত করেছে, ওই চিকিৎসক যাতে কোনওভাবে আর নতুন করে সমস্যায় না পরেন, তা দেখবে। তাঁর দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। চার্জশিটও জমা দিয়েছে পুলিশ।