ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসীর রহস্যমৃত্যু, নেপথ্যে কোন ঘটনা উঠে আসছে?‌

সন্ন্যাসীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ঘরের সামনে থেকে উদ্ধার হয়েছে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসীর ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনার পর থেকে থমথমে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বালিগঞ্জের সদর কার্যালয়। বালিগঞ্জের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের আবাসন থেকে এই স্বামীজির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতের নাম স্বামী শুভরূপানন্দ মহারাজ (৬০)। ঘড়িতে তখন ভোর ৪টে। মঙ্গল আরতির জন্য মূল মন্দিরে গিয়েছিলেন সন্ন্যাসীরা। ফিরে আসার পথে দেখেন এক সন্ন্যাসী, নিজের ঘরের সামনে গ্রিল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে স্বামী শুভরূপানন্দ মহারাজ।

এদিকে স্বামী শুভরূপানন্দ ওরফে প্রদ্যোৎ মহারাজ আদতে বাঁকুড়ার বাসিন্দা। প্রায় ৩০ বছর ধরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। রবিবার সকালে তাঁকে চারতলার সিঁড়ির কোলাপসিবল গেট থেকে ঝুলতে দেখেন অন্যান্য আবাসিক সন্ন্যাসীরা। তখন খবর যায় গড়িয়াহাট থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এই খবরটি প্রকাশ্যে আসতে দিতে চায়নি ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ বলে অভিযোগ। তাই রবিবার সকালের ঘটনা সোমবার প্রকাশ্যে এসেছে। কেন এমন করা হল?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

অন্যদিকে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন শুভরূপানন্দ মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অন্যান্য স্বামীজিদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, বেশ কয়েকদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন এই সন্ন্যাসী। কিন্তু কেন অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন মহারাজ?‌ সেটা পুলিশকে জানাতে পারেননি অন্যান্যরা। তবে মৃত্যুর আগে শুভরূপানন্দ মহারাজ আবাসিকদের জানিয়েছিলেন, বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর ঘুম হচ্ছিল না। আর ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ সূত্রে খবর, গত দু’‌বছর ধরে শরীর ভাল যাচ্ছিল না প্রবীণ এই সন্ন্যাসীর। অনিদ্রার অসুখে ভুগছিলেন। ডিপ্রেসন থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই সন্ন্যাসী।

আরও পড়ুন:‌ আজ মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা, জেনে নিন যানজট এড়াতে ট্রাফিক আপডেট

যেখানে সন্ন্যাসীরা হতাশ হওয়া মানুষজনকে পথের দিশা দেন সেখানে একজন সন্ন্যাসী নিজেই অবসাদে ভুগছিলেন এটা নিয়ে দ্বিমত অনেকেই। তাহলে নেপথ্যে কি অন্য কিছু আছে?‌ উঠছে প্রশ্ন। কেন অবসাদে ভুগছিলেন ওই সন্ন্যাসী?‌ এটাও জানতে চাইছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে গড়িয়াহাট থানার পুলিশ। যদিও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ বলেন, ‘‌অনেকদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। ঘুম আসত না বলে রাতে হাঁটতেন। চিকিৎসা চলছিল তাঁর। আজ এরকম হয়েছে। মনে হচ্ছে আত্মহত্যা।’‌ সেবামূলক কাজের জন্য বহু মানুষই ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অনুগামী। কলকাতার বালিগঞ্জে এই সংস্থার মূল মঠ। এই মঠেই এমন ঘটনা ঘটায় ভক্তদের মনে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।