অশ্রুসিক্ত নয়নে সহপাঠী, সহকর্মী ও বন্ধুরা স্মরণ করেছেন দৈনিক যুগান্তরের সদ্যপ্রয়াত সিনিয়র রিপোর্টার হাবিবুর রহমান খানকে। তারা হাবিবের ব্যক্তি, শিক্ষা ও কর্মজীবনের নানা স্মৃতি তুলে ধরেন। সেইসঙ্গে সত্য কথা শক্ত করে বলতে পারায় তার প্রশংসা করেন। সদা নেতৃত্বসুলভ আচরণের ভূমিকাও টানেন বন্ধু ও সহকর্মীরা।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) হাবিবুর রহমানের প্রয়াণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করেন সহপাঠীরা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী লেকচার হলে শোকসভায় হাবিবকে স্মরণ করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়েছেন অনেকে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাংবাদিক হাবিবুর রহমান খানের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করা হয়। এরপর হাবিবের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন তার বন্ধু সাংবাদিক মঈন উদ্দিন খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল হক।
সভায় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক ইলিয়াস খান বলেন, ‘হাবিবের মতো সাংবাদিক বর্তমানে বিরল। তার মুখে যা ছিল, অন্তরেও তা ছিল। এ কারণে হয়তো তাকে কারো ভালো নাও লাগতে পারে। তবে যারা তার সঙ্গে মিশেছেন তারা জানেন এটিই হাবিবের বড় শক্তি ছিল। হাবিবের এই অকালে চলে যাওয়া মেনে নেওয়ার মতো নয়। তার মতো সাংবাদিকদের এ সমাজে বড্ড প্রযোজন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী বলেন, ‘হাবিব ছিলেন একজন পেশাদার এবং সৎ সাংবাদিক। এ প্রজন্মের অন্যতম সেরা একজন সাংবাদিক ছিলেন তিনি। তার স্পষ্টবাদিতা ছিল প্রশংসনীয়। তার স্মৃতি ধরে রাখতে তার নামে আমরা কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করবো।’
ডিআরইউয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিক হাবিব বিপদে অন্যের পাশে দাঁড়াতেন। তার এ অভ্যাস ছিল বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই।’
সভায় স্মৃতিচারণ করে হাবিবের স্ত্রী ফারজানা মাহমুদ সনি বলেন, ‘হাবিব শুধু আমার স্বামী ছিল না, সে ছিল আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। আমি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধুকে অকালে হারালাম। আমার পথচলা এখন অনেকটাই কঠিন হয়ে গেল। হাবিব সবার সঙ্গে মিশতে পারত অনায়াসে। এটি তার সবচেয়ে বড় গুণ ছিল। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’ এ সময় তার সঙ্গে ছিল সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া তাদের একমাত্র সন্তান জারা।
শোক সভায় সাংবাদিক হাবিবের জন্য শোকগাঁথা লেখা হয়। তাকে নিয়ে একটি স্মৃতিগ্রন্থ তৈরির কথা জানানো হয়। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্য ছিলেন। গেল ২২ আগস্ট মঙ্গলবার বিকালে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৪১ বছর বয়সী এই সাংবাদিক।