কলকাতা পুরসভার শৌচাগার দুর্নীতিতে দায় কার উঠছে প্রশ্ন

সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার স্কুলগুলিতে শৌচাগার সংস্কারের নামে বিপুল অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে পুরসভার তিন আধিকারিকের। যার মধ্যে রয়েছেন একজন মহিলা আধিকারিক। তাঁর নাম হল রুমানা খাতুন। ইতিমধ্যেই তিনি এই ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়েছেন। এই অবস্থায় পুরসভায় কোনও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই কেন সেই দায় আধিকারিকদের উপর গিয়ে পড়ে? তা নিয়ে পুরসভার অন্দরেই উঠেছে প্রশ্ন।

আরও পড়ুন: পুর স্কুল দুর্নীতিতে অভিযুক্তের চিঠি মমতাকে, দাবি সংখ্যালঘু বলে ফাঁসানো হচ্ছে

আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, সাধারণত পুরবোর্ডের নির্দেশ মেনেই আধিকারিকরা কাজ করেন। তাহলে সেক্ষেত্রে কেন পুরবোর্ডের সদস্যদের এই অভিযোগ থেকে দূরে সরিয়ে রেখে শুধুমাত্র আধিকারিকদের দায়ী করা হয়? তা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন। উল্লেখ্য, স্কুলের শৌচালয় সংস্কারের নামে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে। যে ঠিকানার স্কুলের শৌচাগার সংস্কার করা হয়েছে। সেই ঠিকানায় কোনও স্কুলই নেই বলে সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার ভিজিল্যান্স কমিটি তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে। পুরসভার ভিজিল্যান্স বিভাগের দাবি, ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এই গরমিল হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি সংস্কারের জন্য এই টাকা দেওয়া হয়েছিল। ৬৩টি বিদ্যালয়ের শৌচাগার সংস্কারের জন্য ৬০ হাজার টাকা করে খরচ করা হয়েছিল। কিন্তু, আদৌও সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ।

এই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রুমানার দাবি, শৌচাগার সংস্কার নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের রিপোর্ট দিয়েছেন। তা ইন্সপেক্টররা খতিয়ে দেখেছেন। তারপরে তিনি সই করেছেন। তাছাড়া তৎকালীন শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় সেই ফাইলে সই করেছেন।এছাড়াও একজন আইএএস অফিসার ছাড়াও ৫ জন পুর অফিসার তাতে সই করেছেন। তাহলে সেই ক্ষেত্রে বাকিদের ছেড়ে শুধুমাত্র অধিকারিকদের উপরে কেন দায় চাপানো হচ্ছে? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আধিকারিকদের একাংশ।

তাঁদের বক্তব্য, শুধু মাত্র স্কুলের শৌচাগার সংস্কারের ঘটনায় নয়, এর আগে ত্রিফলা কেলেঙ্কারিতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। সেক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিকদের শাস্তি পেতে হয়েছিল। এছাড়াও জেএনএনইউআর প্রকল্পে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে নিকাশি সংস্কারের ক্ষেত্রেও কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছিল। পুরসভার অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেয়েই ঠিকাদার সংস্থার শংসাপত্র বাতিল করা হয়েছিল। যদিও মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, দুর্নীতি হয়ে থাকলে দোষীরা অবশ্যই শাস্তি পাবে। কেউ রেহাই পাবে না।