ইলেকট্রিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন নির্মাণ থমকে! জট ছাড়াতে বৈঠক পুজোর আগেই

বৈদ্যুতিন গাড়ি এ রাজ্যে চালুর ব্যাপারে আগেই সিলমোহর পড়েছিল। এই গাড়িগুলির চার্জ দেওয়ার জন্য চার্জিং স্টেশন নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা এগোচ্ছিল ঠিক মতোই। কিন্তু বাস্তবে সমস্যার সম্মুখীন এই প্রকল্পটি। আগে গাড়ি নির্মাণ হবে নাকি, আগে চার্জিং স্টেশন; এই নিয়েই দোটানায় রাজ্য সরকার। ফলে থমকে রয়েছে পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ। গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা এবং বিক্রেতা সংগঠনের তথ্য বলছে, আগের তুলনায় বৈদ্যুতিন গাড়ির বিক্রি অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা সমস্যায় পড়ছে গাড়ি চার্জ দেওয়া নিয়ে।

এই বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি কিনে শুধুমাত্র বাড়ির গ্যারেজে চার্জ দেওয়া যথেষ্ট হচ্ছে না। আবার রাস্তার ধারেও নেই কোনও চার্জিং স্টেশন, ফলে বিপদে পড়ছেন ব্যবহারকারীরা। অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে এই ইলেকট্রিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন নির্মাণ হলেও তা কতটা ব্যবহারযোগ্য থাকবে, দৈনিক কত সংখ্যক গাড়িই বা সেখানে চার্জ দেওয়ার জন্য উপস্থিত হবে; সে বিষয়েও সন্ধিহান সংশ্লিষ্ট মহল। এই জট কাটানোর জন্যই গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা, বিক্রেতা এবং নির্মাণ সংস্থাকে নিয়ে পুজোর আগেই বৈঠকে বসতে চলেছে রাজ্যের বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। এরাই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে এই পরিকাঠামো নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রশাসন সূত্রে খবর বেসরকারি সংস্থাগুলি রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ২৬৭ টি চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করেছে। এর পরের ধাপে যৌথ উদ্যোগে আরও ১০৪ টি স্টেশন নির্মাণের বরাত পেয়েছে। এরপরে আরও ২৩০ টি জন্য দরপত্র চেয়েছে ওই সংস্থা। কিন্তু কাজের কাজ থমকে রয়েছে বেশ খানিকটা। আগের পর্যায়ে বরাত দেওয়া স্টেশনগুলিতে নির্মাণ কাজের অগ্রগতি চোখে পড়ার মত কিছুই হয়নি। অগস্ট মাসে পাঁচটি স্টেশন চালু হবার পরিকল্পনা থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি কাজে অগ্রগতি না হওয়ার কারণে। এই স্টেশনগুলি চালু না হওয়ার পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের জোগানে ঘাটতি থেকেছে, তেমনই পরিকল্পনা নিয়েও অস্পষ্টতা থেকেছে। আগে রাজ্যজুড়ে এই ইলেকট্রিক গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে নাকি, আগে চার্জিং স্টেশনের পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি রাজ্য সরকার কিংবা বেসরকারি সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে।

পুজোর আগে এই সমস্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থা বৈঠকে বসে কোনও মীমাংসা সূত্র বের করতে পারে কিনা, এখন সেটাই দেখার। এই প্রকল্পের উপদেষ্টা সংস্থা ডেলয়েট কী ধরনের ভূমিকা নিতে পারে, সে বিষয়েও নজর থাকবে। পশ্চিমবঙ্গে গাড়ি বিক্রেতা সংগঠন ফাডা’র চেয়ারম্যান সোহম মিশ্র জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে ধীর গতিতে হলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে ইলেকট্রিক গাড়ি। এই কারণে চার্জিং পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন রয়েছে। তার অভিমত আগে সরকারি গাড়ি এবং গণপরিবহণে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহারে জোর দেওয়া হলে ব্যবসায়িকভাবে চার্জিং পরিকাঠামোর নির্মাণ সহজ হবে। এখন অপেক্ষা প্রকল্প রূপায়নের জন্য৷