‘শারদীয়ার আন্তরিক শুভনন্দন’, মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি শব্দ এখন সরকারি হোর্ডিংয়ে

বাংলা নববর্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা গিয়েছিল নতুন শব্দ। আর সেই শব্দ হল— ‘শুভনন্দন’। এটা নিয়ে বিরোধীরা নানা কটূক্তি পর্যন্ত করেছিলেন। কিন্তু তাতে বাড়তি প্রচারই পেয়েছিল ‘‌শুভনন্দন’‌। এবার সেই শুভনন্দন শব্দটি দেখা যাচ্ছে সরকারি হোর্ডিংয়েও। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। শারদ শুভেচ্ছা জানাতে নানা জেলায় হোর্ডিং দিচ্ছে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রয়েছে সেই হোর্ডিংয়ে। আর লেখা, ‘শারদীয়ার আন্তরিক শুভনন্দন’। তার সঙ্গে আর একটি লাইনও রয়েছে। যেখানে লেখা রয়েছে, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। অর্থাৎ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা।

মুখ্যমন্ত্রী আগেও নানা নামকরণ করেছেন। যেমন— নবান্নের সঙ্গে মিল রেখে ‘উপান্ন’, আবার ধনধান্য অডিটোরিয়াম–সহ নানা কিছু। সেখানে নতুন সংযোজন ‘শুভনন্দন’। বাংলা নববর্ষের প্রাক্কালে দিঘা থেকে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আপনাদের সকলকে শুভ নববৈশাখের শুভনন্দন জানাচ্ছি। আমরা বলি অভিনন্দন। আমি আজ থেকে শুরু করলাম শুভনন্দন। শুভকামনা, অভিনন্দন যদি হতে পারে, তা হলে শুভনন্দন কেন নয়?’ এবার সেই শুভনন্দন দেখা যাচ্ছে সরকারি হোর্ডিংয়ে।

এদিকে এই নতুন শব্দকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু ব্যাকরণসম্মত প্রয়োগ নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। বাংলা অভিধানের অন্যতম সংকলক অধ্যাপক সুভাষ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘শব্দটি আগে কখনও শুনিনি। এমন শব্দচয়নের কোনও প্রয়োজন ছিল না।’ এসবের মধ্যেই সরকারি হোর্ডিংয়ে জ্বলজ্বল করতে শুরু করেছে শুভনন্দন। বিশেষ করে জেলাগুলিতে এই হোর্ডিং এখন দৃশ্যমান। পরে তা শহরের বুকেও পড়তে পারে। সাহিত্যিক বাণী বসু বলেন, ‘নন্দনের অর্থ আনন্দ দেওয়া। কোন শব্দ টিকবে বা টিকবে না সেটা সময়ই বলতে পারে।’

আরও পড়ুন:‌ আগ বাড়িয়ে বাড়তি কথা নয়, রাজ্যপালের মুখোমুখি হলেও এমনই নির্দেশ তৃণমূলের

বিজেপি–তৃণমূল ঠিক কী বলছে?‌ অন্যদিকে এই শুভনন্দন শব্দ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। এই বিষয়ে রাজ্য বিজেপির সহ–সভাপতি শমিত দাস বলেন, ‘ভেবেছিলাম উনি মুখ ফসকে বলেছেন। এখন তো সরকারি হোর্ডিংয়েও ওই শব্দের ব্যবহার হচ্ছে। মনে হচ্ছে, উদ্ভট শব্দটির প্রচারের দায়িত্ব তৃণমূল সরকার কাঁধে তুলে নিয়েছে।’ পাল্টা পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের কো–অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘শুভনন্দন আনন্দবোধক শব্দ। এই শব্দটি আরও জনপ্রিয় হচ্ছে।’