তাঁর মতো আন্দোলন কি করতে পারবেন অভিষেক?‌ কালীঘাট থেকে নজর রাখছেন মমতা

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যখন ছিলেন মুকুল রায় তখন জাতীয় স্তরে দলকে কোনও অভিযানে নেতৃত্ব দিতে তাঁকে দেখা যায়নি। সেখানে ওই একই পদে এসে জাতীয় রাজনীতির অন্দরে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা এখন বেশ চর্চার বিষয়। কারণ তিনি কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন না আন্দোলনের। দলীয় বিধায়ক–সাংসদ–কর্মীদের নিয়েই এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও অভিষেক মারাত্মক পরিশ্রম করেছিলেন। তবে তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাংলার ফায়ার ব্র‌্যান্ড লেডি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই নির্বাচনের পরই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ধাপে ধাপে সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলে এখন সফল নেতা। কিন্তু সেখানে আজ গান্ধী জয়ন্তীর দিন প্রথম দলকে একা জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে নেতৃত্ব দিতে মাঠে নেমেছেন অভিষেক। যেটা তাঁর হোম গ্রাউন্ড নয়। যেহেতু নয়াদিল্লিতে পড়াশোনা করেছেন এবং থেকেছেন তাই রাজধানী তাঁর পূর্বপরিচিত। আবার ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হিসাবে বারবার এখানে এসেছেন। তাই রাজঘাট, যন্তরমন্তর, রাইসিনা হিলস একেবারে অচেনা নয়।

এদিকে লক্ষ্যণীয় বিষয় হল—নয়াদিল্লিতে যখন এত বড় আন্দোলন করতে নেমেছেন অভিষেক তখন পায়ের চোট নিয়ে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী এই নিয়ে তাঁর কোনও মন্তব্য নেই। শুধু গান্ধীজয়ন্তী হিসাবে একটা টুইট করেছেন সকলের জন্য। সেখানে কোনও রাজনৈতিক কথা নেই। কিন্তু তিনি কালীঘাটে বসে সবটা দেখছেন। নজর রাখছেন। কিন্তু কিছু বলছেন না। দলের এক শীর্ষ নেতা তাঁকে সব খবর টেলিফোনে দিচ্ছেন। তিনি শুনছেন, কিন্তু কিছু বলছেন না বলে সূত্রের খবর। তাঁর মতো আন্দোলন কি অভিষেক করতে পারবেন?‌ এই প্রশ্ন এখন সকলের। আর পরীক্ষা নিচ্ছেন চুপচাপ তৃণমূল সুপ্রিমো।

আরও পড়ুন:‌ রাজঘাটে ধরনায় বসল তৃণমূল কংগ্রেস, অহিংস পথেই লড়ার বার্তা অভিষেকের

অন্যদিকে এই কর্মসূচিতে থাকার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শেষ মুহূর্তে তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে সরে দাঁড়িয়েছেন। আর সেটা এখন একা কাঁধে তুলে নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন অভিষেক। তবে এই কর্মসূচিতে নবীন এবং প্রবীণ নেতারা রয়েছেন। তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন কতটা বিচক্ষণতার সঙ্গে গোটা বিষয়টি সামলাচ্ছেন অভিষেক। আর তাতেই পরবর্তী নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। বাংলার বকেয়ার দাবিতে এমন আন্দোলন যে করা যায়, এটাই অভিষেকের মস্তিষ্কপ্রসূত। আর এটা যেহেতু একেবারে গ্রামীণ মানুষের সমস্যা তাই চাপে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এটাই না মাইলফলক হয়ে যায়। ভাবছেন অনেকেই। আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে আরও বড় দায়িত্ব নিতে হবে অভিষেককে। তাই কি একা এগিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?‌ উঠছে প্রশ্ন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই আন্দোলন কর্মসূচি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।