Calcutta High Court: কিশোরীদের যৌন আকাঙ্খা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত, কিশোরদের উচিত তা সম্মান করা: হাইকোর্ট

এক কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় যুবককে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের বেঞ্চ। সন্মতিক্রমে সহবাস হলেও এই মামলায় পসকো ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকশা করছে আদালত। তবে মামলায় কিশোর-কিশোরী যৌন অধিকার সংক্রান্ত সচেতনতায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে আদালত।

কিশোরদের উদ্দেশ্যে আদালত জানিয়েছে, যৌন উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। দু’মিনিটের তৃপ্তির জন্য তা হারানো উচিত নয়। অন্য দিকে কিশোরদের উদ্দেশে আদালতের বার্তা, মহিলাদের মর্যাদা ও শারীরিক স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো উচিত।

কী ভাবে যৌন উত্তেজনা তৈরি হয় তাও ব্যাখ্যা করেছে বেঞ্চ। পুরুষের অন্ডকোষ ও মহিলাদের গর্ভাশয় থেকে প্রাথমিক ভাবে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ হয়, যা যৌন উত্তেজনার জন্য দায়ী। এই টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থি। এই গ্রন্থি সক্রিয় হলে যৌন উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে এই গ্রন্থিগুলি নিজে থেকে সক্রিয় হতে পারে না। গ্রন্থিগুলি সক্রিয় হয় উত্তেজক কিছু দেখলে, শুনলে, পড়লে বা বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে কথা বললে।

আদালতের মতে বয়ঃসন্ধিকালে যৌনাত স্বাভাবিক। কিন্তু যৌন আকাঙ্ক্ষা নির্ভর করে একজন পুরুষ বা মহিলার কর্মকাণ্ডের উপর। যৌন আকাঙ্ক্ষা মোটেই ‘স্বাভাবিক’ এবং ‘আদর্শ’ নয়। ব্যক্তির কাজকর্মের উপর তা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই একে নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু দায়বদ্ধতা ও কর্তব্য পালনের প্রস্তাব করেছে আদাদালত।

কিশোরীদের পরামর্শ

১) নিজের শরীরের অধিকার রক্ষা করুন

২) নিজের মর্যাদা ও আত্ম-মূল্য রক্ষা করুন

৩) লিঙ্গ প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে নিজের সামগ্রিক বিকাশের দিকে নজর দিন

৪) নিজের যৌন আকাঙ্ক্ষা/আবেদনকে নিয়ন্ত্রণ করুন। সে যখন দু’মিনিটের আনন্দ উপভোগ করতে দেয়, তখন সে সমাজের চোখ ‘ব্যর্থ’ হয়।

৫) শরীরে স্বশাসনের অধিকার এবং তার গোপনীয়তা রক্ষা করুন।

কিশোদের উদ্দেশ্যে বার্তা

একজন কিশোরের কর্তব্য হল একজন যুবতী বা মহিলার উপরোক্ত কর্তব্যগুলিকে সম্মান করা। একজন কিশোর যাতে মহিলার মর্যাদা এবং তাঁর দেহের উপর স্বশাসনের অধিকারকে সম্মান দেয় তার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত।

যৌন শিক্ষা ও অভিভাবকদের পরামর্শ

সন্তান বিশেষত মেয়েরা যাতে খারাপ স্পর্শ, খারাপ ইঙ্গিত, খারাপ উদ্দেশ্য, খারাপ সঙ্গ চিনতে পারে, তা নিশ্চিত করতে শিক্ষা দিতে হবে। আইন স্বীকৃতি দেয় না, এমন বয়সে সহবাস নিয়েও সতর্ক করতে হবে। মহিলাদের কী ভাবে সম্মান করতে হয়, তা কিশোরদের শেখাতে হবে অভিভাবকদেরই। যৌন শিক্ষা, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিটি স্কুলের পাঠ্যক্রমের একটি অংশ হওয়া উচিত, আদালত জানিয়েছে।