ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বারংবার শিবির বদল করেছেন নীতীশ কুমার। কখনও হাত মিলিয়েছেন বিজেপির সঙ্গে। কখনও আবার ‘চিরশত্রু’ লালুর সঙ্গে গলাগলি করেছেন নীতীশ। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করে জিতেছিলেন নীতীশ। তবে জোটে তাঁর দল ‘সেকেন্ড’ হয়। তাও বিজেপি নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। তবে গদি টলমল দেখে শিবির বদলে আরজেডির সঙ্গে মিলে নতুন সরকার গঠন করেন নীতীশ। আর তারপর থেকেই জাতীয় স্তরের বিরোধী মুখ হওয়ার চেষ্টা করেছেন নীতীশ। ইন্ডিয়া জোটের প্রথম বৈঠকের আহ্বায়কও ছিলেন তিনি। তবে এহেন নীতীশের গলাতেই ফের শোনা গেল বিজেপির প্রশংসা।
মোতিহারিতে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকরের সামনে নীতীশ ভাষণ রাখেন। সেখানেই তিনি বলেন, আগের ইউপিএ সরকারের থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনুমোদন পেতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছিল তাঁকে। পরে কেন্দ্রে সরকার বদলের পর মোতিহারিতে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন সত্যি হয়। সরাসরি মোদীর নাম না নিলেও তাঁর সরারের প্রশংসা করেন নীতীশ। এমনকী স্থানীয় বিজেপি সাংসদ রাধামোহন সিংকে নিজের ‘প্রাণের বন্ধু’ বলে আখ্যা দেন নীতীশ। এই আবহে কী ফের বিহারে সরকার বদল হবে? এই প্রশ্ন প্রবল হয়ে দেখা দেয়।
লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় স্তরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন নীতীশ। তবে সেই অর্থে প্রথম সারিতে উঠে আসতে পারেননি তিনি। এদিকে রাজ্যেও নিজের ডেপুটি তেজস্বীর ‘চ্যালেঞ্জ’-এর বিষয়ে অবগত নীতীশ। এই পরিস্থিতিতে ফের তিনি বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাবেন কি না, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে বিহারের রাজনৈতিক মহলে। তবে নীতীশের এহেন মন্তব্যকে ‘দুধভাত’ আখ্যা দিয়েছেন বিহার প্রদেশ বিজেপি সভাপতি সমরাট চৌধুরী। তাঁর কথায় নীতীশের জন্য বিজেপির দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সমরাট চৌধুরী নীতীশকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘শুধু কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং রাজ্যের জন্য যে কোটি কোটি টাকার অনুদান এসেছে, তার জন্যেও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানানো উচিত নীতীশের। এমনকী তিনি যে এখন মুখ্যমন্ত্রী আছেন, তার জন্যেও মোদীকে ধন্যবাদ জানানো উচিত তাঁর। প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে নীতীশকে তিনি সমর্থন করবেন। তিনি তা করেছিলেন। তবে তিনি শিবির বদলের পর অমিত শাহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে নীতীশের জন্য বিজেপির দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’