Adhir Supports Mahua: ‘নীরব’ তৃণমূল, ‘টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন’ মামলায় মহুয়ার পাশে দাঁড়ালেন কংগ্রেসের অধীর

টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এখনও পর্যন্ত কিচ্ছু বলা হয়নি। এই আবহে অনেকেই মনে করছেন, বিতর্কের আবহে মহুয়ার থেকে দূরত্ব তৈরি করেছে তৃণমূল। মহুয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এই নিয়ে তৃণমূলের কোনও বক্তব্য নেই। দল এব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া দেবে না।’ এই সবের মাঝেই মহুয়া নিয়ে মুখ খুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, নির্দিষ্ট এক শিল্পপতির বিরুদ্ধে কেউ প্রশ্ন করলেই তাঁকে দেশদ্রোহী বানিয়ে দিচ্ছে সরকার। (আরও পড়ুন: ‘আমার পোষ্যকে অপহরণ করেছে’, মহুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ একদা ঘনিষ্ঠ বন্ধুর)

গতকাল সংবাদসংস্থা এএনআই-কে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘বিশেষ এক শিল্পপতির কারণে সরকার বারবার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সরকার একজন বিশেষ শিল্পপতিকে রক্ষা করতে এতটাই তৎপর যে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে প্রশ্ন করলেই ব্যক্তি দেশের শত্রুতে পরিণত হয়।’ অধীর আরও বলেন, ‘আমরা যখন সংসদে যাই, আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেখানে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরি। আমাদের যেই ইস্যু নিয়েই প্রশ্ন থাকে সেটা নিয়েই আমরা প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করি। কিন্তু এথিক্স কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করার এমন উপায় আমি কখনও দেখিনি। প্রত্যেক সদস্যের সংসদের ভিতরে কথা বলার অধিকার আছে।’ এদিকে অধীর এই নিয়ে মুখ খুললেও তৃণমূল কংগ্রেস কিন্তু এখনও নীরব। এদিকে মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর সাংসদপদ খারিজ হবে। তিনি আর ভোটেও প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, সংসদে প্রশ্ন করার বদলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। এই বিতর্ক নিয়ে হলফনামা দিয়েছেন শিল্পগোষ্ঠী হিরানন্দানির সিইও দর্শন হিরানন্দানি। তাতে আরও চাপে পড়েছেন মহুয়া মৈত্র। হলফনামায় হিরানন্দানি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বদনাম করতে আদানি গ্রুপকে নিশানা করেছিলেন মহুয়া। আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য নাকি হিরানন্দানিকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামা অনুযায়ী, দর্শন হিরানন্দানির দাবি, আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। পরিবর্তে তাঁর থেকে মহুয়া বিলাসবহুল জিনিসপত্র নিতেন। হিরানন্দানি দাবি করেছেন, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করার পথ বেছে নেন মহুয়া। কিন্তু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে নীতি সংক্রান্ত বিষয়, প্রশাসনিক বিষয়ে মোদীকে আক্রমণের সুযোগ পাননি মহুয়া। সেজন্য আদানি গোষ্ঠীর মাধ্যমে মহুয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণের পন্থা বেছে নেন।

হিরানন্দানি দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মহুয়ার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁর। সেইসময় বিধায়ক ছিলেন মহুয়া। ২০১৯ সালে সাংসদ হন মহুয়া। সেই সময় ব্যবসায়িক ‘দ্বন্দ্ব’ চলছিল আদানি এবং হিরানন্দনিদের মধ্যে। দর্শনের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি না করে আদানি গোষ্ঠীর ধর্মা এলএনজির সঙ্গে চুক্তি করেছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। এই আবহে আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্নমালা তৈরি কে দেওয়ার জন্য দর্শনকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহুয়া। এর জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামায় দাবি কর হয়, ক্রমেই মহুয়ার সঙ্গে হিরানন্দনির সম্পর্ক ভালো হতে থাকে। পরে তাঁর থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করতে থাকেন মহুয়া। তাঁর ওপর নাকি মহুয়া চাপও সৃষ্টি করেছিলেন। এই আবহে মহুয়ার কথা মতো চলতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হওয়ায় তিনি নিজে থেকেই মুখ খুলেছেন বলে দাবি করেছেন হিরানন্দানি।