গত ৭ অক্টোবর হামাস আচমকাই হামলা চালায় ইজরায়েলের ওপর। সীমান্ত পার করে দক্ষিণ ইজরায়েলে প্রবেশ করে নৃশংস ভাবে বহু মানুষকে মেরে দেয় হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা। এই আবহে হামাসকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সাহায্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রসংঘেও ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ আবহে সেই সুরেই নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরল ভারত। রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি আর রবীন্দ্র গতকাল বলেন, গাজা ভূখণ্ডের সাধারণ মানুষকে সাহায্য পাঠাতে থাকবে ভারত। তবে এরই সঙ্গে তিনি ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার নিন্দা জানান তিনি।
গতকাল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আর রবীন্দ্র বলেন, ‘চলমান সংঘাতের জেরে সেই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ভারত… ইজরায়েলে গত ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলা মর্মান্তিক ছিল। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে এর নিন্দা জানাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইজরায়েলের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছিলেন। হামলায় আক্রান্ত সাধারণ মানুষদের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। আমরা এই সংকটের মুহুর্তে ইজরায়েলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছি। এই সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা রয়েছে। এই হামলায় জখম ব্যক্তিরা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, তার জন্য প্রার্থনা করছি। চলমান সংঘাতে যত সংখ্যক সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছেন, তা খুব গুরুতর একটি বিষয় এবং ক্রমাগত এই উদ্বেগ বেড়ে চলেছে। এই আবহে সব পক্ষকেই সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে হবে…’
ভারতীয় প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘ভারত প্যালেস্তাইনের জনগণের জন্য ওষুধ এবং সরঞ্জাম সহ ৩৮ টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে। ভারত সর্বদা ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সমস্যার দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে সওয়াল করেছে। এর জন্য আলোচনা হওয়া উচিত বলে মনে করা ভারত। একটি সার্বভৌম, স্বাধীন এবং কার্যকর প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা উচিত। প্যালেস্তিনীয়দের স্বীকৃত সীমান্তের মধ্যে বসবাস করা উচিত। এরই সঙ্গে ইজরায়েলের নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগের বিষয়টি নজরে রাখা উচিত। দুই দেশই যাতে শান্তিতে পাশাপাশি থাকতে পারে, সেটাই চায় ভারত। এরই মাঝে আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্যালেস্তাইনের জনগণকে সাহায্য করতে থাকব। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, তথ্য প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রগুলিতে আমরা প্যালেস্তাইনকে সাহায্য করতে থাকব। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে, গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠানো অব্যাহত রাখবে ভারত… দুই পক্ষই যাতে ফের আলোচনার টেবিলে ফিরতে পারে, তার জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো উচিত…’