Joe Biden on Hamas Attack: ভারত-মধ্যপ্রাচ্য করিডরের জেরে হামাস হামলা, দাবি বাইডেনের, ‘ভুল ব্যাখ্যা’, সাফাই ওয়াশিংটনের

জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে স্বাক্ষরিত হয়েছিল ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ বাণিজ্য করিডরের চুক্তি। মোদীর সেই স্বপ্নের প্রকল্পের জন্যেই নাকি ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এমনই দাবি করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই আবহে জো বাইডেনের মন্তব্যের ‘ভুল ব্যাখ্যা’ হচ্ছে বলে দাবি করলেন মার্কিন ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলস স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস কোঅর্ডিনেটর’ জন কার্বি।

সম্প্রতি মার্কিন সফরে গিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ইজরায়েলের ওপর হামাসের হামলা নিয়ে মুখ খোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেই সম দাবি করেন, ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ বাণিজ্য করিডরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার জেরেই হামাস হামলা চালিয়ে থাকতে পারে ইজরায়েলের ওপর। এই নিয়ে জন কর্বি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে আপনি তাঁকে ভুল বুঝেছেন। তিনি যা বলেছিলেন তা হল – তিনি বিশ্বাস করেন যে আমরা সেই অঞ্চলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে চাইছি (ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে)… একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ… আর তাই সেই সব প্রচেষ্টা ভেস্তে দিতে হয় হামাস এই আক্রমণগুলি চালিয়ে থাকতে পারে।’

এর আগে হামাসের হামলা নিয়ে বাইডেন বলেছিলেন, ‘আমরা ইজরায়েলের সঙ্গে মিলে আঞ্চলিক এককীকরণ এবং সামগ্রিকভাবে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম। আমি নিশ্চিত যে হামাস এই কারণেই ইজরায়েলে হামলা চালায়। আমার কাছে এর পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই। তবে আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমার এটাই মনে হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, এর আগেও একবার বাইডেন দাবি করেছিলেন, সম্ভবত ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ বাণিজ্য করিডরের পরিকল্পনা বানচাল করতেই হামাস হামলা চালায়। তবে বাইডেন বলেন, ‘এই কাজ অসম্পূর্ণ রাখা হবে না।’

উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত নয়া অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করতে ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশন সমঝোতা চুক্তিতে সই করে। এই করিডরের ফলে দক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের মধ্যে অর্থনৈতিক রুট তৈরি হবে। জানা গিয়েছে, রেল-বন্দর করিডরের মাধ্যমে ভারত থেকে সহজেই ইউরোপে পৌঁছে যাবে পণ্য। এই করিডরের ফলে ভারত তো বটেই, সার্বিকভাবে এশিয়ার একাংশের অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে। পুরোদমে ওই করিডর সচল হয়ে গেলে প্রচুর বিনিয়োগ আসবে। ৭২ ঘণ্টায় মধ্যে ভারত থেকে ইউরোপে পণ্য পৌঁছে যাবে। তৈরি হবে প্রচুর কর্মসংস্থান।

এই করিডরের মাধ্যমে ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ফুজাইরা বন্দর পর্যন্ত পণ্য পরিবহণ করা হবে। তারপর সৌদি আরব এবং জর্ডনের ২,৬৫০ কিলোমিটার রেল ও রাস্তার মাধ্যমে ইজরায়েলের হাইফা বন্দরে পৌঁছাবে। ভারতীয় সংস্থা এই বন্দর পরিচালনার দায়িত্বে আছে। ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে ১,৮৫০ কিমির রেল ও রাস্তা আছে। বাকি অংশ তৈরির পরিকল্পনা করছে সৌদি। সেই হাইফা বন্দর থেকে ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ-সহ উপমহাদেশের বিভিন্ন পণ্য ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো ইউরোপের দেশে পাঠানো যাবে। উল্লেখ্য, কয়েকটি পর্যায়ে মধ্য-প্রাচ্য করিডরের কাজ সম্পূর্ণ হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে তৈরি করা হবে রেল রুট। এই রেলের ইঞ্জিন সৌরশক্তিতে চলবে। ভবিষ্যতে মায়ানমার এবং বাংলাদেশের মাধ্যমে ভিয়েতনাম থেকে ভারতের মাধ্যমে ইউরোপে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রেও এই করিডর কাজে লাগবে। ওই করিডরের ফলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় পণ্য ইউরোপের বাজারে পৌঁছে যাবে।