পাকিস্তানের বিপক্ষেও হলো না

এমন সময় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতার নিয়ম কানুনের বেড়াজাল সামনে এলো, যখন বাংলাদেশের বেশ দুঃসময়। একে তো আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর শুধুই হারের কাহিনী, কোনোভাবেই এই অবস্থা থেকে মুক্তি মিলছে না। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও একটি সুযোগ ছিল ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের ট্র্যাকে জায়গা করে নেওয়ার। কিন্তু আবারও হতাশার কাহিনী লিখে হারের বৃত্তেই ঘুরপাক খেয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।

টানা ষষ্ঠ হারের বেদনা এখন আষ্ঠেপৃষ্ঠে আকড়ে ধরেছে। সেই যে শুরুর ম্যাচে আফগানিস্তান বধ, এরপর শুধুই হতাশা-আফসোস সঙ্গী। আজকের হারের পর এখন ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়লো।

১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথম অংশ নিয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল। নটিংহ্যামে আগে ব্যাট করে ২২৩ রান সংগ্রহ করে পরবর্তীতে পাকিস্তানকে ১৬১ রানে বেঁধে ফেলে জয়ের উৎসব করেছিল।

ইডেন গার্ডেন্সে আজ ২৪ বছর পর তেমন কিছুরই আশা করেছিলেন ক্রিকেট সমর্থকরা। তবে মাঠে আসা সমর্থকদের হতাশ হতে হয়েছে দিনের আলো নেভার আগেই। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯৯’র স্মৃতি ফিরিয়ে আনা যায়নি। মাাত্র ২০৪ রানের মামুলি সংগ্রহ, যা এখনকার ওয়ানডেতে বেমানান। শাহীন শাহ আফ্রিদি-মোহাম্মদ ওয়াসিমরা মিলে ধসিয়ে দিয়েছে, লাল সবুজ দলকে বড় ইনিংস গড়তে দেয়নি।

আগের মতো টপ অর্ডার ব্যাটাররা আত্মাহুতি দিলেন। তানজীদ, শান্ত, মুশফিক ও তাওহীদরা আতঙ্ক ছড়িয়ে সাজঘরে ফিরলেন। ভাগ্য ভালো লিটন-মাহমুদউল্লাহ-সাকিবের কল্যাণে ২০০ রান  পেরোনো গেছে। 

আরও দায়িত্বশীল হলে হয়তো স্কোর বড় হতে পারতো। মিরাজও পারেননি যোগ্য সঙ্গী হতে। সাকিব দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করে বেশি দূর যেতে পারেননি, ৪৩ রান করতে গিয়ে বল আরও কম খরচ করলে শোভনীয় ছিল। তারপরও কিছুটা  স্বস্তি অধিনায়ক রানে ফিরেছেন!

পাকিস্তানের সামনে মামুলি টার্গেট। তাই সহজেই বাধা অতিক্রম করেছে। কে জানতো ফখর জামান বিশ্বকাপে তার দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের ফর্ম ফিরে পাবেন, ৭ ছক্কায় ৮১ রান করে বোলারদের ওপর চড়াও হবেন! আব্দুল্লাহ শফিকও কম যাবেন না! 

তাই যা হওয়ার তাই হয়েছে। টানা চার ম্যাচ পর ৭ উইকেটে  জিতে পাকিস্তান সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে রইলো। নতুন করে উজ্জীবনী শক্তি পেলো। আর বাংলাদেশ? নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর ক্রমশ যেন অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে। বরং বিপরীতে ‘পুচকে’ নেদারল্যান্ডস কিংবা নিজ দেশে খেলতে না পারা ও অনেক সমস্যার মধ্যে থাকা আফগানিস্তান আগের মতোই এগিয়ে রইলো।

এখন শেষ দুটি ম্যাচ শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কী হবে তা অনেকেই হয়তো অনুমান করতে পারেন। তবে ইতিবাচক কিছু চিন্তা করা যে পাহাড়সম বাধা অতিক্রম করার মতো।

তাই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আসলেই বাংলাদেশের জায়গা হবে কিনা, আশার সলতে টিম টিম করে জ্বলবে কিনা এর জন্য দিনকয়েক অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।