কাটাছেঁড়া না করেই শিশুর ফুসফুস থেকে চুম্বকের সাহায্যে সুচ বের করল AIIMS

জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুর প্রাণ বাঁচালেন দিল্লির এইমস হাসপাতালে চিকিৎসকরা। সুচ আটকে গিয়েছিল শিশুর ফুসফুসে। কোনওরকম কাটা ছেঁড়া না করেই চুম্বকের সাহায্যে শিশুর ফুসফুস থেকে বের করা হল ৪ সেন্টিমিটার লম্বা সুচ। হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের  চিকিৎসকরা সুচ বের করে শিশুর প্রাণ বাঁচালেন। বর্তমানে ৭ বছর বয়সি শিশুটি সুস্থ রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ৪ মিনিটের অস্ত্রোপচারে ধমনী থেকে টিউমার বাদ দিয়ে রোগীর জীবন বাঁচালেন চিকিৎসরা

জানা গিয়েছে, খেলার সময় শিশুটি সুচ গিলে ফেলেছিল। তারপরে জ্বরে আক্রান্ত হয় শিশুটি। জ্বরের পাশাপাশি কাশিও ছিল তার। আর কাশির সঙ্গে রক্তপাত হচ্ছিল। তা দেখে ভয় পেয়ে যান শিশুর অভিভাবকরা। এরপর শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বুকের এক্স-রে করার পর দেখা যায় তার ফুসফুসে একটি ৪ সেন্টিমিটার লম্বা সুচ আটকে রয়েছে। আর সুচ বিঁধে যাওয়ার কারণেই এই সব সমস্যা হচ্ছে। তা দেখে হতবাক হয়ে যান চিকিৎসকরা। সুচটি ক্রমাগত শিশুর বুকের ভিতর বিঁধছিল। ফলে চিকিৎসকরা বুঝতে করতে পারেন অবিলম্বে সুচটি বের করা না হলে সেক্ষেত্রে শিশুটির জীবনহানি পর্যন্ত হতে পারে। প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুকে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। সেখান থেকে তাই শিশুকে এইমস হাসপাতালে রেফার করা হয়। তবে সুচটি যে জায়গায় আটকে ছিল তাতে অস্ত্রোপচার করারও ঝুঁকি নিতে চাইছিলেন না চিকিৎসকরা। 

শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকের দল সিদ্ধান্ত নেয় চুম্বকের সাহায্যে সুচটিকে ফুসফুস থেকে বের করা হবে। সেইমতো চাঁদনি চক বাজার থেকে একটি শক্তিশালী চুম্বক জোগাড় করা হয়। যার দৈর্ঘ্য ছিল ৪ মিলিমিটার এবং দেড় মিলিমিটার চওড়া। সেই চুম্বক গলা দিয়ে ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছে দেন চিকিৎসাকরা। এরপর চুম্বকের টানে ধীরে ধীরে সুচটিকে বাইরে বের করে নিয়ে আসে চিকিৎসকের দল। ডাঃ বিশেষ জৈন এবং ডাঃ দেবেন্দ্র কুমার যাদবের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচারের জন্য এই দল তৈরি করা হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে চলে এই অস্ত্রোপচার।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই অস্ত্রোপচার অত্যন্ত জটিল ছিল। সেক্ষেত্রে চুম্বক ঢোকানোর সময় শ্বাসনালীর সংস্পর্শে আসলে বিপদ ঘটতে পারত। তবে তা কিছু হয়নি। ঠিকমতো অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটি দিল্লির সিলামপুরে বাসিন্দা। রবিবার থেকে জ্বর শুরু হয়েছিল শিশুর। তার মা ভেবেছিলেন সব স্বাভাবিক হবে। কিন্তু, পরের দিনই কাশির সঙ্গে রক্তপাত হওয়ায় দেরি না করে তার মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। শুক্রবার এইমসে অস্ত্রোপচারের পর শনিবার শিশুটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।