৫০ বছরে ৩০ বার হেরেছেন, তবু ভোটে দাঁড়ান এই মনরেগা শ্রমিক, কী কারণে?

‘ধন্যি ছেলের অধ্যাবসায়! ঊনিশটিবার ম্যাট্রিকে সে/ ঘায়েল হয়ে থামল শেষে।’ সুকুমার রায়ের ছড়া সৎপাত্র গঙ্গারাম ঊনিশবার পর পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ করেছিল। রাজস্থানের তিতার সিং ঘায়েল হলেও থামেননি। গত ৫০ বছরে ৩০ বার তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রতিবার তিনি হেরেছেন। তবুও তিনি থামেননি। ফের রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নিবার্চনকে কেন্দ্র করে চড়া রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে আলোচনার উঠেছেন তিতার সিং।

করনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন মনরেগা শ্রমিক ৭৮ বছর বয়সি তিতার। তথ্য অনুযায়ী ১৯৭০ সাল থেকে রাজস্থানের প্রতিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিতার। প্রতিবারই তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে কিন্তু তিনি হতাশ হননি। আরা ২৫ নভেম্বর ভাগ্য পরীক্ষা করতে ভোটে দাঁড়িয়েছেন।

লাগাতার ৩০টি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরও তিনি ভোটে লড়েন। কারণটা কী? জবাবে তিনি বলেন তাঁর লড়াই অধিকারের লড়াই। জমির অধিকার। তিতারের কথায়,’সরকারের উচিত জমি ও সুযোগ সুবিধা দেওয়া। এটা অধিকারের লড়াই।’ অর্থাৎ তিনি শুধু রেকর্ড করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না।

মনরেগা শ্রমিক তিতার সিং বলেন, ‘আমি একের পর নির্বাচনে লড়াই করছি কিন্তু আবার এখনও জমি দাবি পূরণ হয়নি। আমার দিনমজুরি করে।’ তাঁর তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। নাতি-নাতনিরাও বিহাহিত। তাঁর কাছে সঞ্চয় হিসাবে মাত্র ২,৫০০ টাকা রয়েছে। তাঁর কোনও জমি সম্পত্তি বা গাড়ি নেই।

(পড়তে পারেন।  ‘সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে’ মুখ্য তথ্য কমিশনার নিয়োগ, রাষ্ট্রপতিকে চিঠি অধীরের)

তথ্য অনুযায়ী তিতার সিং একজন দলিত। তিনি ১৯৭০ সাল থেকে ভোটে লড়ছেন। সেই সময় থেকে তিনি ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর মতে স্থানীয় লোকেরা ক্যানাল কমান্ড এলাকায় জমি বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তারপর থেকে নিয়মিত ভোট দাঁড়াচ্ছেন তিতার সিং।

মনরেগা প্রকল্পের শ্রমিক তিতার সিং দৈনিক মজুরিতে কাজ করে। কিন্তু ভোট এলেই কাজ বন্ধ করে দিয়ে প্রচারে নেমে পড়েন। ২০০৮ সালে রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন ৯৮৯ ভোট। আবার ২০১৩-র বিধানসভা নির্বাচনে ৪২৭ ভোটে এবং ২০১৮ নির্বাচনে ৬৫৩ ভোট ।