National Cancer Awareness Day Prevent Cervical Cancer With Vaccine, Dr Agnimita Giri Explains ABP Live Exclusive

সার্ভাইকল ক্যান্সার ( Cervical Cancer ) বা জরায়ুমুখের ( Cervix ) ক্যান্সার। মহিলাদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। আর এই অসুখে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছেন এমন মানুষের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। অথচ যথাসময়ে টিকা নিলে জরায়ু মুখের ক্যান্সারের শিকার হতে হবে না মহিলাদের। ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, সারভাইক্যাল ক্যানসার অনেকটাই প্রতিরোধযোগ্য। জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবসে (National Cancer Awareness Day) এই নিয়ে বিস্তারিত অলোচনা করলেন চিকিৎসক অগ্নিমিতা গিরি সরকার। 

 জরায়ুর নিচের দিকের অংশ যাকে বলা হয় জরায়ুমুখ বা cervix। সেখানে যদি কোনও ম্যালিগনেন্ট টিউমর হয় তাকেই বলে সার্ভাইকল ক্যান্সার। এই ধরনের ক্যান্সারে মূলত মহিলারাই আক্রান্ত হন। এর নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ রয়েছে।

  • যেমন –
  • সহবাসের পর রক্তক্ষরণ
  • দুটি পিরিয়ডের মাঝে রক্তপাত
  • মেনোপজের পরও যোনি থেকে রক্তক্ষরণ
  • মাসিক অনেকদিন ধরে চলা
  • এছাড়া যোনি থেকে বিকট গন্ধযুক্ত স্রাব হতে পারে
  • পেলভিক পেন বা শ্রোনিদেশে বা তলপেটের নিচের দিকে ব্যথা অনুভব হওয়া।
  • সহবাসের সময় যন্ত্রণা হওয়া

কারণ –
এই রোগের প্রধান কারণই হল সংক্রমণ। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা মানব প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) এর দ্বারা সংক্রমিত হয়েই এই রোগ হয়। এই ভাইরাসকে আটকানোর টিকা নিলে এবং প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে সচেতন থাকলে এই রোগটিকে আটকানো সম্ভব। 

কাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি 

  • অতিরিক্ত ধূমপান করেন যাঁরা
  • একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক থাকলে
  •  সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিজে আক্রান্ত হয়ে থাকলে
  •   কম বয়স থেকেই  যৌন সম্পর্ক শুরু হয়ে যায় যাঁদের
  •  যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমন হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস ইনফেকশন থাকলে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  • এছাড়া যাঁদের মিসক্যারেজ আটকানোর ওষুধ দেওয়া হয়, ঝুঁকি তাঁদেরও বেশি। 

এবার প্রশ্ন এই রোগ কি আটকানো সম্ভব, যদি হয়, তাহলে কী সেই উপায়। সঠিক সময়ে  টিকা নিলে এই রোগ আটকানো যেতে পারে।

  • হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিন দিয়ে এই ক্যান্সার আটকানো সম্ভব। এছাড়া হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের কারণে আর যা যা অসুখ করে, তাও রুখে দেওয়া সম্ভব।
  • এছাড়া প্যাপ টেস্ট জরুরি। প্যাপ স্মেয়ার (PAP Smear Test) করালে আগে থেকে জরায়ুর মুখের precancerous পরিবর্তন ধরা পড়ে। ২১ বছর বয়স থেকে শুরু করে PAP Smear Test করা যায় নির্দিষ্ট সময় অন্তর। আর তাতে জরায়ুর মুখের কোষে কোনওরকম অস্বাভাবিকতা বা পরিবর্তন ধরা পড়লে আগে থেকেই সতর্ক হয়ে চিকিৎসা শুরু সম্ভব। 
  •  সুরক্ষিত যৌনসম্পর্কের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিজ আটকানো জরুরি। যৌন সম্পর্ক স্থাপনের সময় কন্ডমের ব্যবহার আবশ্যক।
  • যৌন সম্পর্কের সঙ্গীর সংখ্যা সীমিত রাখা আবশ্যক।
  • অধিক পার্টনার মানেই ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়া।
  • ধূমপান ত্যাগ ও সুস্থ জীবনশৈলি বেছে নেওয়াও আবশ্যক। 

কোন বয়স থেকে শুরু ভ্যাকসিনেশন

ভারতে ২০০৬ সাল থেকে  হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। এটি দেওয়া শুরু করা যায় ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সের কিশোরীদের মধ্যে। এই ভ্যাকসিন এই বয়স সীমার মধ্যে দিলে সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা পাওয়া যায়। মূল লক্ষ্য পিরিয়ডস শুরুর আগে ভ্যাকসিন দেওয়া।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিন ৩ রকমের হতে পারে

  • HPV vaccines—9-valent
  • HPV vaccines—4-valent
  • HPV vaccines—2-valent

    এই ভ্যাকসিনগুলি সার্ভাইকল ক্যান্সারের বিভিন্ন স্ট্রেইন থেকে সুরক্ষা দেয়। ১৫ বছরের জন্মদিন পর্যন্ত ২ টো ডোজ। ১৫ থেকে ২৬ বছর বয়স অবধি ৩ টে ডোজ। ২৭ থেকে ৪৫ বছর বয়স যদি হয়, আর তার যদি আগে ভ্যাকসিন না নেওয়া হয়, তাহলেও এই ভ্যাকসিন নেওয়া যায়। কিন্তু তার আগে ডাক্তারবাবুর সঙ্গে আলোচনা করেই। আদৌ এই ভ্যাকসিন নিলে তার কতটা উপকার। আগেই এই ভাইরাস তাঁর শরীরে থাবা বসিয়েছে কি না, তাও জানা জরুরি। 

কোন কোন ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে না –

  • যদি কারও এই ভ্যাকসিনের কোনও ডোজে বাড়াবাড়িরকমের কোনও অ্যালার্জি হয়ে থাকে, তাহলে এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না।
  • গর্ভবতী মহিলারা নিতে পারবেন না এই ভ্যাকসিন।
  • যাঁদের ইস্টে অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না।
  • এই ভ্যাকসিনের সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেও হতে পারে। যেমন – ভ্যাকসিনের হালকা ব্যথা, গা গোলানো, বমি ভাব, জায়গাটি লাল হওয়া, সামান্য ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। 

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিন  শুধু সার্ভাইকল ক্যান্সার নয়, আরও অন্যান্য ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে রুখে দিতে পারে সার্ভাইকল ক্যান্সার। অ্যানাল ক্যান্সার রুখে দিতে পারে ৮০ শতাংশ, যোনির ক্যান্সার বা ভ্যাজাইনাল ক্যান্সার রুখে দিতে পারে ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে। এছাড়াও ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে ভালভার ক্যান্সার আটকানো যায়। এছাড়া ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে এইচপিভি সংক্রমণ থেকে হওয়া আরও নানারকম ক্যান্সার রুখে দিতে পারে। অনেক উন্নত দেশে তো পুরুষদেরও এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। কারণ পুরুষদের ক্ষেত্রে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস দিয়ে যে precancerous lesion গুলো হয়, তা আটকানো যেতে পারে। এছাড়া পুরুষদের ক্ষেত্রে পেনাইল ক্যান্সার, অ্যানাল ক্যান্সার, জেনাইটাল ওয়ার্টসও আটকানো যেতে পারে।  HPV vaccines—9-valent পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত। তবে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিন সার্ভাইকল ক্যান্সার রুখতে সবথেকে বেশি কার্যকরী।

সতর্ক হোন আপনার বাড়ির মেয়েটির কিশোরী বেলা থেকেই । একটি ভ্যাকসিন যদি এতরকম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে, তাহলে সেই টিকা থেকে দূরে থাকা কেন !

Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )

Calculate The Age Through Age Calculator