বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের নূ্ন্যতম বেতন ৫৬% বৃদ্ধি, মানতে রাজি নয় ইউনিয়নগুলি

পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ৫৬.২৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়নগুলি। তারা নূন্যতম মজুরি বর্তমানের তিনগুণ বাড়ানোর দাবিতেই অনড়।

নূন্যতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে লাগাতার শ্রমিক বিক্ষোভেরে জেরে ব্যাহত হচ্ছে। দেশে ৩৫০০টি পোশাক কারখানা থেকে বার্ষিক পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ৫৫ বিলিয়ন ডলার। লেভিস, জারা এবং এইচএন্ডএম-এর মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলিকে পোশাক সরবরাহ করে থাকে বাংলাদেশ।

এই সেক্টরে কাজ করেন প্রায় ৪০ লক্ষ শ্রমিক। যাঁদের বেশিভাগটাই মহিলা। বর্তমান নূন্যতম মাসিক বেতন ভারতীয় মুদ্রায় ৬,২৪০ টাকা। ফলে পোশাক শ্রমিকদের ভয়াবহ একটা অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হয়।

নূন্যতম বেতন বৃদ্ধির দাবিত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন পোশাক শিল্পীদের একাংশ। ফলে বন্ধ হয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা। দিন কয়েক আগেই উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয় আন্দোলনকারীর। আন্দোলনের জেরে ধাক্কা লেগেছে আন্তর্জাতিক বাজারেও।

ইউনিয়নগুলির দাবি, নূন্যতম বেতন বর্তমান বেতনের তিনগুণ করতে হবে। কিন্তু কারখানা মালিকরা ২৫ শতাংশের বেশি বেতন বাড়াতে রাজি নয়। বাংলাদেশে নূন্যতম বেতন সরকার নিযুক্ত বোর্ড দ্বারা নির্ধারিত হয়। যে বোর্ডে ইউনিয়ন, মালিকপক্ষের প্রতিনিধি ছাড়াও মজুরি বিশেষজ্ঞরাও থাকেন। বোর্ডের সচিব রাইশা আফরোজ সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে বলেন,’পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের জন্য নতুন নূন্যতম মজুরি করা হয়ে ১২,৫০০ টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় ৯,৪০০ টাকা)।’

কিন্তু ইউনিয়নগুলি এই নূন্যতম মজুরি মানতে নারাজ। তাদের দাবি, নূন্যতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় ১৭,৩৯০টাকা) করতে হবে। ইউনিয়নগুলি বক্তব্য, ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রমিকরাও। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি বেতন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের প্রধান কল্পনা আক্তার বলেন, ‘প্রস্তাবিত নূন্যতম বেতন গ্রহণযোগ্য নয়। এই বেতন আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম।’

পোশাক শিল্পের মজুরি নির্ধারনে প্রতি পাঁচ বছর বোর্ড বৈঠকে বসে। এর আগে ২০১৮ সালে নূনতম বেতন ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রায়) করা হয়। উপস্থিতি ফি হিসাবে শ্রমিকরা মাসে কমপক্ষে ৩০০ টাকা করে পান।

এর আগে গত মঙ্গলবারই বেতন বৃদ্ধির দাবি রাজধানী ঢাকা সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। একটি বাসে আগুনও দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।