World Diabetes Day 2023 Childhood Diabetes In India Type 1 Diabetes Rising Among Kids Along With Type 2 Diabetes Abpp

কলকাতা : ভারত এখন ডায়াবেটিস ( Diabetes Capital ) ক্যাপিটাল। হুহু করে বাড়ছে মধুমেহ আক্রান্তের ( Diabetes ) সংখ্যা। তবে এদের মধ্যে বেশিরভাগই টাইপ টু ডায়াবেটিসে ( Type 2 Diabetes ) আক্রান্ত। আর টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় শিশুরা । তবে শিশুরা যেশুধুই টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত হবেন এমনটা নয়। টাইপ ২ তেও আক্রান্ত হতে পারে। ২ থেকে ১০ বছর বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস দেখা যায়। আর কিশোর বয়সে  হয় টাইপ টু ডায়াবেটিস । 

  টাইপ ১ ডায়াবিটিস ( Type 1 Diabetes ) ডায়াবেটিস কিন্তু মিষ্টি খাওয়ার বাড়বাড়ন্তের কারণে হয়না। অটোইমিউন অসুখের কারণে যেমন টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস হতে পারে, আবার এই ধরনের ডায়াবেটিস হতে পারে জিনগত কারণেও। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে মানুষের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তাই টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ধরন ও চিকিৎসা টাইপ ২- র থেকে অনেকটাই আলাদা। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জয়দেব রায়। তিনি জানালেন, ২ থেকে ১০ বছরের মধ্যে শিশু আক্রান্ত হতে পারে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অভিভাবকরা প্রথম চোটে বুঝতেই পারলেন না বাচ্চার ডায়াবেটিসের লক্ষণ। তাই ধরা পড়তে পড়তে বেশ দেরি হয়ে যায়। আর তাতে ক্ষতিকর প্রভাব বাড়ে। আসলে ডাক্তাররা মনে করছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের ডায়াবেটিসের ব্যাপারে সার্বিক সচেতনতার অভাব রয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় করতে দেরি হয়ে যায়। 

পরীক্ষায় ডায়াবেটিস ধরা পড়লে পরে নিয়মিত কতটা ভয়াবহ অবস্থা, তা মূল্যায়ণ করতে আরও কিছু পরীক্ষা দরকার পড়ে। এই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

কোন কোন উপসর্গ দেখে বুঝবেন টাইপ ১ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হতে পারে আপনার শিশু ? 

  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
  • বারবার তেষ্টা পাওয়া 
  • ক্ষুধা বৃদ্ধি
  • কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া
  • অস্পষ্ট দৃষ্টি
  • ক্লান্তি অনুভব করা
  • ক্ষত সহজে না সারা 

    এছাড়া টাইপ ১ ডায়াবিটিস ফেলে রাখলে আরও জটিল উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টাইপ ১ ডায়াবেটিস জটিলতা ডেকে আনে। এই অসুখ শরীরের প্রধান অঙ্গগুলির ক্ষতি করতে পারে। এই অঙ্গগুলির মধ্যে রয়েছে হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী, স্নায়ু, চোখ এবং কিডনি। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস জটিল হয়ে গেলে প্রাণও কেড়ে নিতে পারে। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস থেকে কী কী হয় – 

    • হার্ট এবং রক্তনালীর রোগ: ডায়াবেটিস হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর কিছু সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে বুকে ব্যথা, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ধমনী সরু হয়ে যাওয়া ইত্যদি। 
    • স্নায়ুর ক্ষতি (নিউরোপ্যাথি): রক্তে অত্যধিক শর্করা স্নায়ুর কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

    • ডায়াবেটিস পাচনতন্ত্রকে প্রভাবিত করে ।  বমি বমি ভাব, বমি, ডায়ারিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

    • কিডনির ক্ষতি (নেফ্রোপ্যাথি): কিডনিতে লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র রক্তনালী রয়েছে যা বর্জ্যকে রক্তে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। ডায়াবেটিস এই সিস্টেমের ক্ষতি করতে পারে। এমনকী কিডনির ফেলইয়রও হতে পারে। Diabetic ketoacidosis-ও হতে পারে, যা ফেলে রাখলে প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে ঠিক সময় চিকিৎসায় বিপদ এড়ানো যায়।

    • চোখের ক্ষতি: ডায়াবেটিস রেটিনার রক্তনালীকে ক্ষতি করতে পারে । এটি  অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। 
    • পায়ের ক্ষতি: পায়ে নার্ভের ক্ষতি করে ডায়াবেটিস। 

      টাইপ ১ ডায়াবিটিসের চিকিৎসা 
      টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগের নিরাময় বা প্রতিকার এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। এই রোগ নিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ইনসুলিন নেওয়া জরুরি। ইনসুলিন থেরাপি ত্বকের নিচে ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে নিয়মিত সুগারের পরীক্ষাও জরুরি। এর একমাত্র চিকিৎসাই কিন্তু ইনসুলিন।

      টাইপ টু ডায়াবেটিস

      শুধু টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস নয়, টাইপ টু ডায়াবেটিসও হতে পারে শিশুদের। টাইপ টু ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় থেকে যে ইনসুলিন ক্ষরণ হয় তা ঠিকমতো করে কাজ করে না, তাই  ডায়াবেটিস হয়।  তবে এক্ষেত্রে  বয়োঃসন্ধির শিশুদের বেশি বিপদ। ডা. জয়দেব রায় জানালেন, ইদানিং খাওয়া-দাওয়ার অভ্যেস বদলে যাওয়া, খেলাধুলো কমে যাওয়ার ফলে, বাচ্চাদের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। আর এই অতিরিক্ত ওজন যাদের, তাদের অনেকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে ডায়াবেটিস। অনেক সময় যে সব কিশোর-কিশোরীদের ওজন একটু বেশি, তাদের ঘাড় ও গলার ওপর কালো, মোটা দাগ দেখা যায়। এটাও কিন্তু ডায়াবেটিসের লক্ষণ। ১২ থেকে ১৭ বছরের বাচ্চাদের মধ্যেও যে ডায়াবেটিস থাবা বিস্তার করছে, তা প্রথম চোটে অনেকেই বুঝতে পারেন না। মনে রাখতে হবে, এটা টাইপ টু ডায়াবেটিস। প্রথমে কোনও লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। পরে কোনও কারণে রক্তপরীক্ষা বা প্রস্রাব পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যেতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিসের উপসর্গ।  
      টাইপ টু ডায়াবেটিসের চিকিৎসা

    • টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে খাওয়া দাওয়ায় রাশ টানা, লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট ও ওরাল ড্রাগ জরুরি। বেশি বাড়াবাড়ি হলে ইনসুলিনও দেওয়া হয়। তবে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিন নেওয়াই প্রধান চিকিৎসা। কারণ  টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় কম ইনসুলিন ক্ষরণ করে আর টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন ক্ষরণ বন্ধই হয়ে যায়। 

      আরও পড়ুন : 


      ডা. জয়দেব রায়

Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )

Calculate The Age Through Age Calculator