‘‌নতুন করে কোনও গাছ কাটা যাবে না, অনুমতি নিতে হবে’‌, মেট্রো সম্প্রসারণে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য ৭০০ গাছ কাটতে হবে। এমনই বক্তব্য ছিল মেট্রোর কাজ যে সংস্থা করছিল তাদের। এই গাছ কাটার বিরোধিতা করে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মামলা করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আজ, শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। মেট্রো রেলের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই এই কথা মানলেও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‌ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।’‌ ময়দানের এত গাছ কেটে ফেললে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই ময়দানে মেট্রো স্টেশনের কাজের জন্য নতুন করে গাছ কাটা যাবে না বলে আজ জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

এদিকে আজ, শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, নতুন করে কোনও গাছ কাটা যাবে না। একান্তই গাছ কাটতে হলে বন দফতরের অনুমতি নিতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, ‘‌মেট্রো রেলের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কিন্তু ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। ময়দান হল শহরের বড় ফুসফুস। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি জলের তলায় প্রথম মেট্রো এখানেই।’‌ অর্থাৎ গাছ না কেটেও কাজ করার পক্ষেই পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট বলে মনে করা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্ট আজ জানিয়েছে, মেট্রো রেলের কাজ বন্ধ রাখার দরকার নেই। কাজ চলবে। তবে নতুন করে গাছ কাটতে হলে বন দফতরের অনুমতি নিতে হবে আরভিএনএলকে।

অন্যদিকে এই মামলায় বন দফতর ও রাজ্য সরকারকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, সেনাবাহিনীর অনুমতি ছাড়া নতুন করে গাছ কাটা যাবে না। শুক্রবার এই শুনানি চলাকালীন রাজ্যের চিফ কনজারভেটিভ ফরেস্টকেও মামলায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে যুক্ত করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় আরভিএনএল, সেনাবাহিনী, রাজ্যের মুখ্যসচিব, কলকাতা পুরসভা, কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রক এবং রাজ্যের বন দফতরকে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পরবর্তী মামলার শুনানি ১৯ ডিসেম্বর।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে’‌, আমহার্স্ট স্ট্রিট কাণ্ডে নগরপালকে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

এছাড়া মোমিনপুর থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রোর সম্প্রসারণের কাজের জন্য ময়দানের ৭০০ গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয় মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ওই মামলায় আগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য ও বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে’র ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য ছিল, যে সংখ্যক গাছ কাটার কথা বলা হচ্ছে সেটা অত্যন্ত উদ্বেগের। ময়দান শুধু একটি খোলা জায়গা মাত্র নয়, এটি শহরের ফুসফুসও বটে।