সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরেও পর্যাপ্ত CCTV বসেনি আমহার্স্ট স্ট্রিট সহ বহু থানায়

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে প্রতিটি থানা চত্বরে ১৪ টি জায়গায় সিসিটিভি লাগাতে হবে। এই নির্দেশ মেনে কলকাতার ২৪ টি থানায় সিসিটিভি বসানোও হয়েছে। কিন্তু তারপরে থমকে গিয়েছে সিসিটিভি বসানোর কাজ। কলকাতার বাকি থানাগুলিতে এখনও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সিসিটিভি বসানো হয়নি। সে ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কেন সেগুলিতে সিসিটিভি বসানো হয়নি? তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিশেষ করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় যুবকের রহস্যমৃত্যুর পরে সেই বিষয়ে আরও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সে ক্ষেত্রে মূলত অর্থভাবকেই দায়ী করছেন লালবাজারের কর্তারা।

আরও পড়ুন: ‘‌সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে’‌, আমহার্স্ট নিয়ে নগরপালকে নির্দেশ হাইকোর্টের

লালবাজারের এক আধিকারিক দাবি করেছেন, এই সমস্ত থানায় সিসিটিভি বসানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। যেহেতু নবান্ন থেকেই অর্থ পাঠানো হয় তাই সিসিটিভি বসানোর জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে নবান্নের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত থানায় সিসিটিভি বসানো সম্ভব হচ্ছে না। যদিও আমহার্স্ট স্ট্রিটে ঢোকা এবং বেরোনোর পথে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু, আধিকারিকদের উপর নজরদারির জন্য কোনও সিসিটিভি নেই। ফলে আমহার্স্ট স্ট্রিটে ঠিক কী ঘটেছিল সে বিষয়ে স্পষ্ট জানা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধ্যায় থানায় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল অশোককুমার সিংহের। থানায় চোরাই মোবাইল জমা দিতে গিয়ে আর তিনি বাড়ি ফেরেননি । পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। তাছাড়া একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, অচেতন অবস্থায় থানা থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অশোক কুমারকে। তবে তার আগে কী ঘটেছিল সে বিষয়ে কোন ভিডিয়ো ফুটেজ নেই।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেই প্রাথমিকভাবে যাদবপুর, পাটুলি, পর্ণশ্রী সহ ২৪ টি থানা চত্বর সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। এই থানাগুলির ঢোকা এবং বাইরে বেরোনোর মূল গেট সহ লক আপের ভিতর ও বাইরে সিসিটিভি লাগানোর পাশাপাশি লবি, করিডর, রিসেপশন, ইনস্পেক্টর বা ওসি এবং সাব-ইনস্পেক্টর ও অফিসারের ঘরে বসেছে সিসিটিভি। এছাড়া ডিউটি অফিসারের ঘরে, শৌচাগারের বাইরে, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের ঘরে ও থানার পিছনে ক্যামেরা লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে বাকি থানাগুলির ক্ষেত্রে তা হয়নি।

লালবাজার সূত্রের খবর, প্রথম দফায় ক্যামেরা বসানোর জন্য তহবিলের টাকা দেওয়া হয়েছিল। তখন ক্যামেরাও বসানো হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফার ক্যামেরা বসানোর জন্য টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারপরে ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি ফলে কাজও অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে। উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশ মেনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসালে যেমন রাতের ছবি দেখা যাবে তেমনি কথোপকথনও শোনা যাবে। তবে জানা গিয়েছে, অনেক আধিকারিকরাও নিজেদের খরচে থানায় সিসিটিভি বসিয়েছেন। আবার পুলিশের একাংশের অভিযোগ, সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হলেও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না।