‘‌চিকিৎসা পরিষেবায় সন্তুষ্ট না হলে চিকিৎসক–নার্সদের হেনস্থা হতে হয়’‌, ক্ষোভ রাজ্যপালের

শহর অথবা গ্রামে দেখা যায় হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমে ভাঙচুর। আসলে রোগীমৃত্যু নিয়ে চিকিৎসক এবং নার্সদের হামলার মুখে পড়তে হয়। রোগীর পরিবারের অভিযোগ থাকে, সঠিকভাবে মেলেনি চিকিৎসা পরিষেবা। আর তাই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং চলে ভাঙচুর থেকে হামলা। এমন খবর একাধিবার উঠে আসে খবরে। এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মুখেও সেই ক্ষোভের কথা শোনা গেল। যা নিয়ে বেশ চর্চা হতে শুরু করেছে। এতে রোগীর পরিবারের সদস্যদের কাছেও বার্তা পৌঁছল। তাতে কি কমবে চিকিৎসক–নার্সদের উপর হামলা?‌

এদিকে এই ঘটনা শহর অথবা জেলায় উত্তোত্তর বাড়ছে। সেখানে সহানুভূতি দিয়ে দু’‌পক্ষের বিষয়টি দেখা উচিত বলে মনে করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গতকাল, শুক্রবার দন্ত চিকিৎসকদের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল। সেখানে গিয়ে চিকিৎসক এবং নার্সদের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেন তিনি। আর তখনই উঠে আসে এই হামলার কথা। বাংলার রাজ্যপাল এদিন বলেন, ‘‌যখন কেউ চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সন্তুষ্ট হন না, বিশেষ করে রাজনৈতিক কারণে তখন চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকদের হেনস্থার শিকার হতে হয়। এটি একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।’‌ এভাবেই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন রাজ্যপাল।

অন্যদিকে গত ৩০ নভেম্বর থেকে দন্ত চিকিৎসকদের জাতীয় কনফারেন্স শুরু হয় কলকাতার সায়েন্স সিটি কমপ্লেক্সে। এটা আগামীকাল, রবিবার পর্যন্ত চলবে। এই কনফারেন্সেই আমন্ত্রিত ছিলেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানেই চিকিৎসক–নার্সদের উপর আমলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু ‘‌রাজনৈতিক কারণ’‌ উল্লেখ করার জেরে বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। কারণ এক, রোগীর পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে এমন করে বলে বিষয়টি মনে করা হচ্ছে। দুই, কিছু ঘটনার পিছনে রাজনীতি আছেও বোঝায়। কোনটি ঠিক বোঝাতে চেয়েছেন রাজ্যপাল তা খোলসা করেননি।

আরও পড়ুন:‌ বিজেপি বিধায়ক অভিষেকের নামে প্রকল্পের আবেদন করলেন, তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ একাধিকবার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে রোগীর কোনও কারণে মৃত্যু হলে অভিযোগ ওঠে সঠিক পরিষেবা মেলেনি। আবার কখনও অভিযোগ সঠিকই থাকে। তবে যেটাই হোক হামলা হয় চিকিৎসক–নার্সদের উপর। আবার এসব অভিযোগ নিয়ে আগে কলকাতা হাইকোর্টে পর্যন্ত মামলা হয়েছে। ২০২৩ সালেরই অগস্ট মাসে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে এমন একটি মামলা উঠেছিল। সেখানে অভিযোগকারী চিকিৎসকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। আর রাজ্যপালের কথায়, ‘‌এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া দরকার। চিকিৎসক হোক বা অন্য কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষ, প্রত্যেকেই নিজের সবটুকু উজার করে দেন।’‌