‘‌বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে’‌, এবার সরাসরি স্পিকার বিমানকে আক্রমণ দিলীপের

বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে অসম্মান করার অভিযোগে শীতকালীন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর হয়ে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এসে সওয়াল করেছেন। এই আবহের মধ্যেই এবার কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আবদুল মানানের ফেসবুক পোস্ট সরগরম করে তুলেছে রাজ্য–রাজনীতি। বিধানসভার স্পিকারদের উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে মান্নান সাহেব লেখেন, ‘‌মাননীয় অধ্যক্ষগন এত বিতর্কিত কেন? আজকাল শুনি স্পিকারের আচরণ তেমন নয়। বিরোধীদের ভিন্ন চোখে দেখেন। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসি স্পিকাররা তার ব্যতিক্রম ছিলেন।’‌ কংগ্রেসের পালে হাওয়া টানার চেষ্টা করলেও সেই হাওয়া ধরেছেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

এদিকে আবদুল মান্নানের ফেসবুক পোস্টে অতীত ইতিহাসের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তাই তিনি টেনে এনেছেন শৈলকুমার মুখোপাধ্যায়ের নাম। ফেসবুক পোস্টে লেখেন, তাঁর আমলে বামপন্থীরা, বিশেষ করে সিপিআই বিধানসভার মধ্যে কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে নানা কুকথা বলতেন। এই হচ্ছে কংগ্রেস। এমন ছিলেন কংগ্রেসের স্পিকার। সিপিএমের স্পিকার হাসিম আবদুল হালিম সীমাবদ্ধ সুযোগের মধ্যেও বিরোধীদের প্রতি উদারতা দেখাতেন। এই দুই স্পিকারের কথা বলে একদিকে কংগ্রেসের পক্ষে হাওয়া টানলেন। অপরদিকে বাম–কংগ্রেস জোটের পক্ষে আস্থা রাখলেন। পরোক্ষে বিজেপির হয়ে সওয়াল করলেন।

অন্যদিকে এই ইস্যুতে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ সেই হাওয়াকে নিজেদের দিকে ঘোরাতে চেষ্টা করলেন। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এই ইস্যুতে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌বিধানসভায় এর আগে উনি প্রতিবাদ করেছিলেন বলে ওনাকে ধাক্কা মারা হয়েছিল। ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সেই স্মৃতি হয়তো উনি ভোলেননি। যাঁরা স্বৈরাচারের কথা বলে তাঁরাই স্বৈরাচারী মানসিকতা দেখাচ্ছে বিধানসভায়। এভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে। আগেও হয়েছিল। তখন সিপিএম কংগ্রেস ছিল। এখন বিজেপি আছে।’‌ দিলীপ ঘোষ এখানে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌অন্য কোনও দেশে জন্মালে মহাদেশের নেত্রী হতেন’‌, সুকি–মমতাকে একাসনে বসালেন মদন

এছাড়া বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ১১ জন বিজেপি বিধায়কের নামে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। বিধানসভায় ছুটির দিনে ঢুকেছে পুলিশ। তলব করা হয়েছে বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ককে। কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখার সামনে হবে জিজ্ঞাসাবাদ। এই বিষয়ে সুর চড়িয়ে মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌বিধানসভার স্পিকারের কি ক্ষমতা নেই জাতীয় সংগীতের অবমাননা হলে পদক্ষেপ করার? কেন করছেন না? পুলিশ ডাকা হচ্ছে কেন? অন্য সময় তো আমাদের বিধায়কের পটাপট সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। এখন সেটা করার সাহস নেই। তাই অন্যভাবে বিজেপি বিধায়কদের বিরক্ত করা হচ্ছে।’‌