Mamata Banerjee: ‘কংগ্রেস ভুলেই হার,’ কেন বিজেপির জয়কে বড় করে দেখতে নারাজ মমতা?

ছত্তিশগড়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনে বিজেপির জয়কে বিরোধীদের বিপর্যয় হিসাবে দেখা উচিত নয়। কারণ কংগ্রেসের হারের ব্যবধান কম। সদ্য প্রকাশিত পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই মত জানালেন তৃণমূলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, কংগ্রেস তরুণ নেতাদের সামনে না আনার ফল ভোগ করছে।

সোমবার বিধানসভায় মমতা বলেন, ‘বিজেপি দাবি করছে তারা ২০২৪-এ বাংলায় ৩৫টি (৪২টির মধ্যে) লোকসভা আসন জিতবে। অন্তত পাঁচটি জিতে আমাদের দেখান। অহংকার আসলে পরাজয়ের দিকে নিয়ে যায়। যদি ইন্ডিয়া জোটের অংশীদারদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি সঠিকভাবে করা হয় তবে আগামী বছর বিজেপির কোনও সুযোগ থাকবে না। কংগ্রেস কিছু ভুল করেছে। আমাদের এর থেকে শিখতে হবে এবং নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’

তাঁর সংযোজন, ‘পরিসংখ্যান দেখুন। বিজেপি অল্প ব্যবধানে জিতেছে। এটা সম্ভব হয়েছে (বিরোধীদের) ভোট বিভাজনের কারণে। সঠিক আসন ভাগাভাগি হওয়া উচিত ছিল।’

৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে বৈঠকে বসছে ইন্ডিয়া জোট। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী এখনও তৃণমূলের কাছে কোন আমন্ত্রণ পত্র এসে পৌঁছায়নি। এই কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত কোনও চিঠি বা ফোন পাইনি। ৬ ডিসেম্বর রাতে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হয়ে চারদিন ওখানে থাকার কথা। আমি কী ভাবে আমার প্রোগ্রাম পরিবর্তন করতে পারি?’

এদিন লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগদানের জন্য দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দক্ষ তরুণ নেতাদের সামনে আসতে না দেওয়া কংগ্রেসের পরাজয়ের অন্যতম কারণ। এই অশঙ্কা থেকেই তাঁর নিজের দলের ক্ষেত্রে বয়সের সীমাবদ্ধতার নীতিটি প্রয়োগ করছেন বলে জানান তৃণমূলের ‘সেনাপতি’।

ফলের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ বিশেষভাবে রাজস্থানের কথা উল্লেখ করেছেন,  তবে তিনি শচীন পাইলট বা অশোক গেহলটের নাম নেননি। যাঁদের দ্বন্দ্ব রাজ্যে বিজেপির জয়ের কারণ হিসাবে উল্লেখ করছেন তিনি।

অভিষেক বলেন, ‘কোনও দলই প্রবীণ নেতাদের দলে চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে দিতে পারে না। তরুণ নেতাদের এগিয়ে আসতে দিতে হবে। কংগ্রেস এর জন্য মূল্য দিয়েছে।’

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই করার সময় বয়সসীমার বিষয়টি থাকবে কি না তা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে অভিষেক বলেন, ‘বয়স সীমা সমস্ত পেশার জন্য প্রযোজ্য। বয়স একজন ব্যক্তির শারীরিক ক্ষমতা কাজকে প্রভাবিত করে। তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু আমাদের দলে বয়সের বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত কেবল আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নিতে পারেন। আমি চাইলেই আমার মতামত দিতে পারব। কিন্তু আমি কখনই বলি না যে শুধুমাত্র তরুণরাই দল চালাতে পারে। আমাদের প্রবীণ নেতাদের অভিজ্ঞতাও দরকার।’

তিনি জয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘যারা জিতেছে আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। যারা হেরেছে, তাদের অবশ্যই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে’।

এর জবাবে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন বলেন,  লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ধুয়ে মুছে যাবে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকে দেওয়াল লিখন দেখতে পাচ্ছেন। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলা থেকে তৃণমূল উৎখাত হবে।’