দেশে ৪৫ শতাংশ বেড়েছে ঘৃণাভাষণ, শীর্ষে যোগীরাজ্য, জানাল NCRB

দেশে ক্রমবর্ধমান ঘৃণাভাষণ নিয়ে একাধিবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু, তা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা কমছে না। বরঞ্চ বেড়েই চলেছে। এমনটাই বলছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট। গত ২ বছরে দেশে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ এ ধারার অধীনে ধর্ম, জাতি, ভাষা এবং জন্মস্থানের ভিত্তিতে গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি করতে ঘৃণাভাষণ এবং এই সংক্রান্ত অপরাধ ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এনসিআরবির ২০২২ সালের তথ্য এমনটাই বলছে।

আরও পড়ুন: NCRB Report: মানব পাচারে সবার শীর্ষে বাংলার পাশের রাজ্য, এনসিআরবি রিপোর্ট

সোমবার প্রকাশিত এনসিআরবির তথ্য অনুযায়ী, যেখানে গোটা দেশে ২০২১ সালে  ৯৯৩ টি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল সেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৪৪৪ টি। অর্থাৎ শতাংশের হিসেবে দেখতে গেলে ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের অপরাধের ঘটনায় সবচেয়ে এগিয়ে যোগী রাজ্য উত্তর প্রদেশ। ২০২২ সালে এই রাজ্যে এরকম ২১৭ টি ঘটনা ঘটেছে। তারপরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজস্থান এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। রাজস্থানে ১৯১টি এবং মহারাষ্ট্র ১৭৮টি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তবে জনসংখ্যার নিরিখে এই ধরনের অপরাধের হারের দিক থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর, সিকিম এবং অরুণাচল এবং দক্ষিণে তেলাঙ্গানা সবচেয়ে এগিয়ে। যেখানে মণিপুরে প্রতি লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে এই ধরনের ঘটনার হার ০.৫, সিকিমে ০.৪ এবং অরুণাচল এবং তেলেঙ্গানায় ছিল ০.৩। এই হিসেবে উত্তরপ্রদেশে প্রতি লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ০.১ টি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। যা উপরের রাজ্যগুলির থেকে বেশ নীচে।

সম্প্রতি রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে ঘৃণাভাষণ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এনসিআরবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে মধ্যপ্রদেশে ১০৮টি এই ঘটনা ঘটেছিল যা ১৯১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজস্থানে ২০২২ সালে ১৯১ টি ঘটনা ঘটেছে। যা ১৩৮ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

এদিকে, তেলাঙ্গানায় ২০২১ সালে ৯১টি ঘটনা ঘটেছিল যেখানে ২০২২ সালে ১১৯টি মামলা হয়েছে। যা ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অবশ্য ছত্তিশগড়ে এই ঘটনা কমেছে। ২০২১ সালে এখানে ৭ টি ঘটনা ঘটেছিল । তবে ২০২২ সালে মাত্র পাঁচটি মামলা হয়েছে। মিজোরামে গত দুই বছরে কোনও মামলার রিপোর্ট হয়নি। অন্যান্য প্রধান রাজ্যগুলির মধ্যে, তামিলনাড়ুতে ১৪৬ টি, অন্ধ্রপ্রদেশে ১০৯ টি,  কর্নাটকে ৬৪, অসমে ৪৪,  বাংলায় ৪৩, পাঞ্জাবে ৪০, হরিয়ানায় ২৯ টি মামলা হয়েছে। অর্থাৎ এই অপরাধের দিকে পশ্চিমবাংলা অনেকটাই নিচে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনি এবং ঘৃণাভাষণের ক্রমবর্ধমান ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এরপরই এ সংক্রান্ত অপরাধের উপর নজরদারি এবং স্বতঃপ্রণোদিত আইনি পদক্ষেপের উদ্দেশ্যে অন্তত ‘সুপার’ পদমর্যাদার কোনও পুলিশ আধিকারিককে জেলা স্তরে ‘নোডাল অফিসার’ হিসাবে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল।