আলিপুরদুয়ারের সমবায়ে হানা দিল সিবিআই, তল্লাশিতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

আলিপুরদুয়ারের মহিলা ঋণদান সমবায় সমিতিতে হানা দিল সিবিআই। এখানে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতির তথ্য পেল সিবিআই। গতকাল, শুক্রবার এই সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এমন কয়েকজন ঋণগ্রহীতাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পরই এই সমবায় সমিতির ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এই সমবায় সমিতিতে গ্রাহকরা টাকা রেখেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা ফেরত পাননি বলে অভিযোগ। পরে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেই তদন্তে নেমে ঋণেও দুর্নীতির তথ্য পেল সিবিআই।

এদিকে বেশ কয়েকটি নথি হাতে এসেছে সিবিআই কর্তাদের। আজ, শনিবার গ্রাহকরা সেখানে এসেছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবা পর সিবিআই অফিসাররা জানতে পারেন সমবায় সমিতিতে জমা টাকা থেকে ঋণ দিতেন সমবায় সমিতির কর্তারা। এমনকী ঋণগ্রহীতার নামে অতিরিক্ত অর্থ ঋণ মঞ্জুর করিয়ে বাড়তি টাকা আত্মসাৎ করতেন বলে অভিযোগ। বাকি টাকা ঋণগ্রহীতাকে দেওয়া হতো। ঋণগ্রহীতা যে পরিমান টাকা হাতে পেতেন তার থেকে বহু গুণ বেশি টাকা তার নামে তুলে নেওয়া হতো। অনেক সময় ঋণ নেওয়ার জন্য ক্লার্ককে কমিশন দিতে হতো বলেও অভিযোগ।

অন্যদিকে সিবিআই তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, এই সমবায় থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন সূর্যনগরের বাসিন্দা রাজু সাহা। সেই টাকা শোধও করেন তিনি। কিন্তু রাজু সাহার নামে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা নথিভুক্ত রয়েছে। তাই রাজু সাহাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। এই কথা শুনে রাজু বলেন, ‘‌আমার মায়ের এই সমবায় সমিতিতে ৬০ হাজার টাকা ফিক্সড ডিপোজিট আছে। সেটার বদলে আমি ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। আমার এলআইসির কাগজও জমা দিয়েছিলাম। এখন জানতে পারলাম আমার নামে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ দেখানো আছে।’‌

আরও পড়ুন: চাকরিপ্রার্থীদের ধরনা মঞ্চে মুখোমুখি কুণাল–কৌস্তভ, তুমুল বচসা, উড়ে এল জুতো

এমন অজস্র গ্রাহকের নামে নানা অঙ্কের ঋণ দেখানো আছে। অথচ তাঁরা তা নেননি। আলিপুরদুয়ার সমবায় সমিতিতে এসে সিবিআই তথ্য পেয়েছে, এমন অনেক গ্রাহক আছেন যাঁরা টাকা ঋণ নিয়ে কিছু টাকা শোধ করার পর তাঁকে জানানো হচ্ছে, কোনও টাকাই তিনি শোধ করেননি। এখান থেকে দুর্নীতির তথ্য মোড় নেয়। এবার জিজ্ঞাসাবাদে সেটাও জানতে পেরেছেন সিবিআই কর্তারা। এখানে ঋণ দেওয়া এবং নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন আইন মানা হয়নি। জমা হওয়া টাকা সমবায়ের কর্তারা দেদার লুঠ করেছেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এখানে সারাদিন তল্লাশি চালানো হয়।