Varicose Veins Increasing In India, Modern Treatment Started In Kolkata, Know Varicose Veins Symptoms Treatment ABP Live Exclusive

কলকাতা : ভ্যারিজোজ় ভেন। নামটা খুব চেনা নয় ঠিকই। কিন্তু সমস্যাটা খুবই পরিচিত। অনেকেই ভোগেন এই অসুখে। ভারতীয়দের মধ্যে তো এখন বেশ চোখে পড়ছে এই অসুখ। অবহেলায় জটিল হয়ে উঠছে সমস্যা। লক্ষণ বুঝতে না পেরে প্রথম দিকে অনেকেই এই অসুখকে চিনতে পারেন না, ডাক্তারের কাছেও যান না। তাতেই বাড়ে বিপদ। কী কী লক্ষণ দেখা যায় ভ্যারিকোজ ভেনের ক্ষেত্রে ? 

  •  পায়ে নীলাভ শিরার জট দেখতে পাওয়া ।
  • শিরাগুলি জট পাকিয়ে ফুলে থাকার মতো ইম্প্রেশন বাইরে থেকে লক্ষিত হওয়া।
  • পা ভারী হয়ে আসা।
  • পা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়া
  • পা জ্বালা জ্বালা করা
  • পেশিতে টান ধরা
  • রাতের বেলা ঘুমের মধ্যে শিরায় টান ধরা 
  • পায়ের চামড়া খসখসে হয়ে যাওয়া, চুলকানো। 

কেন হয় এই অসুখ  
ভ্যারিকোজ ভেনের সমস্যা মূলত প্রকট হয় পায়ে। চামড়ার নিচ থেকে গাঢ় নীল রঙের শিরা উপশিরা গুলো জট পাকিয়ে থাকে। দেখা যায় নীল ফোলা ভাব। এই বিষয়ে এবিপি লাইভের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন অ্যাভিস ভ্যাসকুলার সেন্টার ( Avis Vascular Centre ) এ র বিশিষ্ট সার্জেন, সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি জানালেন, মানবদেহের পায়ের শিরাগুলি দু’টি সারিতে বিভক্ত থাকে। আর এই  দুটি সারির মধ্যে যোগসূত্র হল আন্তঃশিরা। কোমরের কাছে থাকে একমুখী ভাল্ব, যা রক্তকে উপরদিকে চালিত করে । এই ভাল্বের কাজ হল রক্তকে একদিকে প্রবাহিত করা। কিন্তু এই ভালভ ঠিক মতো কাজ না করলে রক্ত বিপরীত দিকে প্রবাহিত হতে শুরু করে। পায়ের নিচের দিক থেকে রক্ত উপরের দিকে বাহিত না হয়ে আবার ফিরে আসে।  ফলে ওই রক্তনালীগুলির আবরণী ফুলে ওঠে । চামড়া ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায় যেন। সেটাই ভ্যারিকোজ ভেন।   

          কেন ভালভ দুর্বল হয়ে পড়ে ? 

  • বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে এই ভাল্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিক্ষক, ট্রাফিক পুলিশ থেকে হোটেলের কুক বা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করা যে কোনও মানুষই আছেন রিস্ক জো়নে। 
  • কিছুক্ষেত্রে এই অসুখ জন্মগত। কারও কারও ক্ষেত্রে এই ভাল্বটি ত্রুটিপূর্ণই থাকে জন্ম থেকে। খুঁজে দেখলে, হয়ত দেখা যাবে যাবে, তাঁদের এটি বংশগত অসুখ। 

    পেশিতে টান ধরা ভ্যারিকোজ ভেনের অন্যতম লক্ষণ 

    শরীরের মাংস পেশি চায় অক্সিজেনেটেড ব্লাড।  আর ওই নির্দিষ্ট ভালভটি ঠিক মতো কাজ করে না বলেই পায় পায়ের নিচের দিক থেকে উপরের দিকে ওঠা রক্ত ফের নেমে আসে। আর সেই রক্ত তো অক্সিজেনেটেড ব্লাড নয়, ডিঅক্সিজেনেটেড ব্লাড। তাই পেশির সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গেই যন্ত্রণা শুরু হয় সেখানে। আর এটাই চলতি কথায় পেশিতে টান ধরার সমস্যার কারণ। তখন একটু হাঁটা চলা করলে সাময়িক রেহাই পাওয়া যায়। এই সমস্যা হয় মূলত পা-তেই।  

    কাদের ক্ষেত্রে ভ্যারিকোজ ভেনের ঝুঁকি বেশি

  • মহিলারা বেশি ভোগেন এই অসুখে। বহু মহিলার ক্ষেত্রে  সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে এই সমস্যা শুরু হয়। 
  • অতিরিক্ত ওজন যাঁদের, তাঁদের এই অসুখের ঝুঁকি বেশি। 
  • যদি পরিবারের অন্য সদস্যদের ভ্যারিকোজ ভেন থাকে, তাহলে তাঁর ঝুঁকি বেশি । 
  • দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে কাজ করেন যাঁরা , তাঁদের ঝুঁকি বেশি নিঃসন্দেহে। মনে রাখতে হবে, শুধু বাইরে কাজ করেন যাঁর তাঁদেরই নয়, বাড়িতেও রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে যিনি রান্না করেন, তাঁর ঝুঁকিও বেশি । যে মাকে বাচ্চা কোলে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘুরতে হয়, তাঁকেও এই সমস্যায় পড়তে হতে পারে। 
  • যাঁদের বংশগত ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের ঝুঁকি বেশি। অনেকে তো আবার এই সমস্যা নিয়ে জন্মায়। কিন্তু ছোট বেলায় যেহেতু বাচ্চারা ছোটাছুটি করে তখন তাঁদের সমস্যাটা চোখে পড়ে না। এবার সে যখন বয়োঃসন্ধিতে পৌঁছায় তখন প্রকট হয় এই সমস্যা। যন্ত্রণা শুরু হয়। 
  •  বহু খেলোয়াড়রাও আসেন এই সব সমস্যা নিয়ে। তবে চিকিৎসায় সেরেও ওঠেন পুরোপুরি। 

    কোন কোন লক্ষণ দেখলে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে ?  

  • ভ্যারিকোজ ভেন সম্পর্কে সচেতনতা এখনও অনেক কম। পায়ে ব্যথার সমস্যায় তো ভোগেন অনেকেরই । তবে এর পিছনে যে কারণ ভ্যারিকোজ ভেন, তা বোঝেন না অনেকে। তাই অন্যান্য লক্ষণগুলি যদি মিলে যায়, তাহলে ভ্যারিকোজ ভেনের জন্য ডাক্তার দেখাতেই হবে ।
  • মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্যথার উপসর্গ যত প্রকট হয়, পুরুষদের কিন্তু ততটা ব্যথা হয় না। রোগটা বেশ বেড়ে গেলে , তখনই পুরুষরা ভ্যারিকোজ ভেনের জন্য ব্যথা অনুভব করেন। 
  • পায়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ। প্রথমে এটাকে অনেকেই ডার্মাটাইটিস ভাবেন। কিন্তু ডাক্তাররা দেখলেই বোঝেন কোনটা চামড়ার অসুখ আর কোনটা শিরার। 
  • ভেরিকোজ ভেন  চিকিৎসা না করে ফেলে রাখলে ফল হতে পারে মারাত্মক। হতে পারে ভেনাস আলসারও। আলসারের লক্ষণ কী ? প্রথমে কোথাও আঘাত বা খোঁচা লাগলে আলসার হয়। প্রথম দু-একবার ওষুধে সেরে যায়। কিন্তু তারপর যদি কোনও আলসার কিছুতেই না সারে, তখন বুঝতে হবে নন হিলিং আলসার – ভেনাস আলসার, যার অন্তর্নিহিত কারণ ভ্যারিকোজ ভেন।  

    কীভাবে ধরা পড়ে ভ্যারিকোজ ভেন? 

  • ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশনে ধরা পড়ে ভ্যারিকোজ ভেন। ভ্যারিকোজ ভেন বাইরে থেকে দেখা যাবেই, এমনটা নয়। যদি উপসর্গ ঠিকমতো না দেখা যায়, তাহলে নিশ্চিত হতে আলট্রাসাউন্ড ডুপ্লেক্স স্ক্যান করতে হবে। কালার ডপলারের মাধ্যমেই চিকিৎসকরা ভ্যারিকোজ ভেনের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হন। মনে রাখতে হবে, এই ডপলার স্ক্যানটা করতে হবে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়।   

    ভ্যারিকোজ ভেনের চিকিৎসা কী ? 

  • গত ১০-১৫ বছরে ভ্যারিকোজ ভেনের চিকিৎসায় বিপ্লব এসেছে। এখন ছুরি কাঁচি ছাড়াই ভ্যারিকোজ ভেনের চিকিৎসা সম্ভব। তিনটি সিঁড়ির উপর দাঁড়য়ে এর চিকিৎসা। 
  • EVRF (Endovenous Radiofrequency Ablation)
  • EVLT ( Endovenous Laser Varicose Vein Surgery) 
  • গ্লু থেরাপি 

    ডাক্তারবাবু জানালেন, কয়েকঘণ্টার চিকিৎসার মাধ্যমেই ভেরিকোজ ভেনের পেশেন্টকে সুস্থ করা যেতে পারে। আর তাতে কাটাছেঁড়াও করতে হয় না। ওপেন সার্জারির কোনও বিষয় নেই। এই পদ্ধতি ৯০ শতাংশের উপর সফল, সমস্যা ফিরে আসার আশঙ্কাও নেই, দাবি চিকিৎসকের। সকালে ভর্তি হয়ে বিকেলের মধ্যে ছাড়া পান রোগী। যন্ত্রণাও তেমন নেই। একদিনের মধ্যেই রোগী হাঁটা চলা করতে পারেন। অনেকেই এই চিকিৎসা করে কাজে ফিরছেন খুব শিগগিরি। ডাক্তারবাবুর দাবি, এই চিকিৎসাপদ্ধতির পরে একটি ব্যান্ডেজ নিয়ে রোগী বাড়ি যান। তাতে কোনও কাজেই কোনও অসুবিধে হয় না। বাচ্চা কোলে নেওয়া থেকে বাইক চালানো, সব কাজই করা যেতে পারে। 

    লেজ়ার সার্জারি ছাড়া ঘরোয়া পদ্ধতিতে কি নিরাময় সম্ভব ?   

    কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্টকিং বা বিশেষ ধরনের মোজা ব্যবহার করেও সাময়িকভাবে সমস্যা সামাল দেওয়া যায়। তবে তা পরে থাকা একটু অসুবিধেজনক। তার উপর গরমের দেশ। তাই মোজা ব্যবহার অনেকেই করেন না নিয়মিত।                                                  
     

    আরও পড়ুন : নাক দিয়ে জল পড়া মানেই সর্দি নয় ! হতে পারে টিউমর বা মস্তিষ্কের বিশেষ অংশে ফাটলও

       

Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )

Calculate The Age Through Age Calculator