লোকসভার ভেতরে স্মোক ক্যান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দুই যুবক। আর বাইরে তখন স্লোগান দিচ্ছেন আরও দুজন। তাদের এই ছবি দেখে অনেকেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তারপরই দেখা যায় এক তরুণী সংসদের বাইরে বলছেন, তানাশাহি নেহি চলেগা।
দ্রুত পুলিশ আটক করে তাকে। পরে জানা যায় তার নাম নীলম। কিন্তু কে এই নীলম? তিনি সেই সময় জানিয়েছিলেন, কোনও সংগঠন থেকে আসিনি। আমরা ছাত্রছাত্রী। আমরা চাকরি পাই না। ছোট ব্যবসাদার, গরিব মানুষ তাদের কথা শোনা হয় না।
পুলিশ তাকে আটক করে। পরে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় নীলম ভার্মা নামে ওই তরুণীকে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদী মুখ বলেই পরিচিত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবাদের মুখ হিসাবে পরিচিত তিনি।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, গ্রামে তিনি প্রতিবাদী মুখ হিসাবে পরিচিত। বাড়ির বড় সন্তান তিনি। একটা সময় কৃষি আইনের প্রতিবাদেও তিনি ময়দানে নামতেন। যন্তরমন্তরে মহিলা কুস্তিগীরদের সমর্থন জানানোর জেরে একটা সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিল।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে তাঁর বাড়়ির লোকজন জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে নীলম সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছিলেন। তারপর থেকেই তার সব স্বপ্ন ভেঙে যায়। তবে সবসময়ই তিনি পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে থেকেছেন। এদিকে তিনি ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতিও ধরে ফেলেছিলেন। গ্রামের যুবকদের নিয়ে তিনি লাইব্রেরিও করেছিলেন। কিন্তু পরে ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতি ধরে ফেলায় তিনি রোষানলে পড়েছিলেন।
তার মা সরস্বতী দেবী জানিয়েছেন, পড়াশোনার জন্য় হিসারে পাঠিয়েছিলাম। সেখানেই পিজিতে থাকত। কিন্তু এমন করবে সেটা জানতাম না। আজও কথা বলেছি। কিন্তু দিল্লির প্ল্যানের ব্যাাপারে কিছু বলেনি।
তার মা জানিয়েছেন, শিক্ষকের পরীক্ষায় চাকরি পাওয়া নিয়ে মেয়ে চিন্তায় ছিল। বার বার বলত, এত যোগ্যতা নিয়েও চাকরি জোটে না, মরে যাওয়াই ভালো। তবে কি তীব্র হতাশা, বেকারত্বের জ্বালা সহ্য করতে না পেরেই ফেটে পড়লেন তারা?
তার মা জানিয়েছেন, মেয়ে বার বার শিক্ষকতার চাকরি পরীক্ষা দিত। কিন্তু চাকরি পাচ্ছিল না। এমএ, এমফিল, বিএড করার পরেও চাকরি পাচ্ছিল না।
তার ভাই জানিয়েছেন, বাবা মিষ্টি তৈরি করে। আমরা দুধ বিক্রি করি। অনেক কষ্ট করতে হয়। মেরুদণ্ডে এত ব্য়াথা নিয়েও ও চাকরি পাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করত। কিন্তু তবু পাচ্ছিল না। এদিনের ঘটনার পরে প্রথমে খারাপ লাগছিল। কিন্তু ভগৎ সিংও তো প্রতিবাদের আওয়াজ তুলতেন।